ডেরিভেটিভস পণ্যের লেনদেনের জন্য খসড়া বিধিমালা প্রকাশ

সময়: রবিবার, আগস্ট ২০, ২০২৩ ৩:৩৬:৩৯ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক: ডেরিভেটিভস পণ্যের লেনদেনের জন্য খসড়া বিধিমালা প্রকাশ করেছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

কমোডিটি ডেরিভেটিভস মার্কেটে ডেরিভেটিভস পণ্যের সুষ্ঠু, দক্ষ ও স্বচ্ছ লেনদেনের জন্য তৈরি করা খসড়া বিধিমালাটি গত বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে এ বিধিমালার বিষয়ে পাবলিক মতামত, পরামর্শ কিংবা আপত্তি থাকলে তা দুই সপ্তাহের মধ্যে বিএসইসির কাছে জানাতে বলা হয়েছে।

বিধিমালায় কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠায় ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন ৪০০ কোটি টাকা হওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিশোধিত মূলধনের নিট সম্পদ হিসেবে সবসময় ৭৫ শতাংশ রাখতে হবে।

‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কমোডিটি এক্সচেঞ্জ) বিধিমালা ২০২৩’ নামের বিএসইসির খসড়া বিধিমালা অনুসারে, কোম্পানি আইন ১৯৯৪ মোতাবেক কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য অবশ্যই পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হতে হবে।

কমোডিটি এক্সচেঞ্জে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার থাকবে, যারা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে বিনিয়োগ করবে। এই স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার কমোডিটি এক্সচেঞ্জের মোট পরিশোধিত মূলধনের সর্বনিম্ন ১০ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবে।

সিআইবি রিপোর্ট অনুসারে ব্যাংকের ঋণখেলাপি না হলে পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডাররা কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার ধারণ করতে পারবে।

এই এক্সচেঞ্জের কোনো পরিচালক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী জালিয়াতি, বিশ্বাস ভঙ্গ বা কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী হতে পারবেন না।

এসব শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে কমিশনের কাছে ১০ লাখ টাকার পেমেন্ট অর্ডার, ব্যাংক ড্রাফট বা ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের মাধ্যমে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য আবেদন করতে হবে।

কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হলো একটি আইনি প্রক্রিয়ার বাজার, যা নিয়ম বা পদ্ধতি নির্ধারণ করে এবং তা প্রয়োগের মাধ্যমে কমোডিটিজ পণ্য বা এ সশ্লিষ্ট বিনিয়োগ পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে সহায়তা করে।

কমোডিটি এক্সচেঞ্জ বা ফিউচার মার্কেটের মাধ্যমে পণ্যের উৎপাদক ও ক্রেতার মধ্যে একটি প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণ করা সহজ হয়। এটি পণ্যবাজারের কারসাজি দূর করতে সহায়তা করে।

কৃষকদের ভালো দাম প্রাপ্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি পণ্যমূল্যের অস্থিরতা কমানোর মাধ্যমে এটি দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতেও সহায়তা করে।

এর মাধ্যমে ফসল কাটার আগেই কৃষক পণ্যের দাম জানতে পারবেন এবং ব্যবসায়ীরা জানতে পারবেন তারা কার কাছ থেকে কিনছেন।

এর মাধ্যমে দেশের সরবরাহ ব্যবস্থা ও কোল্ড স্টোরেজ ব্যবস্থা উন্নত হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে।

উল্লেখ্য, দেশে প্রথমবারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। বিএসইসি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এক্সচেঞ্জটিকে শর্ত সাপেক্ষে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর অনুমোদন দেয়। এজন্য পরামর্শক হিসেবে ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের (এমসিএক্স) সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে সিএসই। চুক্তির পর এমসিএক্স সহযোগিতায় নিজস্ব ট্রেক প্রতিনিধিদের নিয়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণও করেছে সিএইসি। এদিকে গত বছর এক-চতুর্থাংশ শেয়ার কেনার মধ্য দিয়ে সিএসইর কৌশলগত মালিকানায় এসেছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় কনগ্লোমারেট বসুন্ধরা গ্রুপ।

১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সিএসইর পরিশোধিত মূলধন ৬৩৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং শেয়ার সংখ্যা ৬৩ কোটি ৪৫ লাখ। ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী সিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করতে হবে কৌশলগত অংশীদারের কাছে।

সে শর্ত অনুসারে বসুন্ধরা গ্রুপের কোম্পানি এবিজি লিমিটেডের কাছে ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছে এক্সচেঞ্জটি। আর বাকি ৩৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করতে হবে সাধারণ বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে।

 

Share
নিউজটি ৮৪ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged