পতন ঠেকাতে দর কমার সর্বোচ্চ সীমা বিএসইসির নতুন পদক্ষেপ

সময়: মঙ্গলবার, মার্চ ৮, ২০২২ ৬:৪৯:৫৯ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : সাম্প্রতিক সময়ে দেশের শেয়ারবাজারে চলছে ধারাবাহিক দরপতন। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজারে প্রতি আস্থা সঙ্কট এবং পুঁজি হারানোর আতঙ্ক বাড়ছে। যে কারণে দরপতনের মধ্যে লোকসান থেকে নিজেদের পুঁজি রক্ষায় বিনিয়োগকারীরা নিজেদের কাছে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দেয়ায় টাকার অংকে লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে। দরপতন ঠেকাতে এবং বাজারের প্রতি আস্থা ফেরাতে পদক্ষেপ হিসেবে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সিকিউরিটিজ দর কমার সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যা আগামিকাল থেকে কার্যকর। ফলে আজকের ক্লোজিং প্রাইসের উপর ভিত্তি করে কাল সর্বোচ্চ ২% কমতে পারবে। আজ মঙ্গলবার (০৮ মার্চ) বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। সংবাদ সম্মেলন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।

শেখ শামসুদ্দিন বলেন, শেয়ার দর কমার সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশের নির্দেশনাটি পূর্বের দিনের ক্লোজিং প্রাইসের সঙ্গে কার্যকর হবে। তবে শেয়ার দর বাড়ার সীমা অপরিবর্তিত থাকবে।

বিএসইসির এই কমিশনার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগের ন্যায় দীর্ঘমেয়াদি হবে না। পরিস্থিতির উন্নতি হলে ২℅ সীমা তুলে নেওয়া হবে।

শেখ শামসুদ্দিন বলেন, সেকেন্টারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ নিশ্চিতকল্পে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে আরও ১০০ কোটি টাকা দ্রুত বিনিয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যা আজ থেকেই বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেওয়া আমাদের মৌলিক ও প্রধান কাজ। এজন্য আমরা নানাবিধ চেষ্টা করে থাকি। যার ধারাবাহিকতায় দর পতনের সর্বোচ্চ সীমা ২% ও স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধাবস্থা ও বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের একটি জাহাজ পরিত্যক্ত ঘোষণাকে অনেকে বড় প্রচার করছেন বলে জানান বিএসইসির এই কমিশনার। যারা বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছে। এ জাতীয় ৩৫ জন গুজবকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তবে কারও গুজবে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, সেই গুজবের সত্যতা ও প্রভাব কতটুকু, তা যাচাই করার জন্য বিনিয়োগকারীদেরকে পরামর্শ দেন তিনি।

সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকগুলোর ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল ব্যবহারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিবাচক। কিন্তু এখনো অনেক ব্যাংক ওই ফান্ড গঠন করেনি। এছাড়া কেউ কেউ ফান্ড গঠন করলেও তা ব্যবহার করেনি।

শেয়ারবাজারে লেনদেনের গতি বাড়াতে ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে কমিশন টি+১ সেটেলমেন্ট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান বিএসইসির এই কমিশনার। তবে চালুর আগে শেয়ারবাজারে টি+১ সেটেলমেন্টের প্রকৃত অর্থে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে কিনা, তা যাচাই করো হবে। কোন ইতিবাচক ফলাফল ছাড়া চালু করতে চাই না।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ভূমিকাটা যেমন হওয়া দরকার ছিল, তা কোম্পানিটির বর্তমান ম্যানেজমেন্ট উপলব্ধি করছেন। আশা করি এই বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানটি আগামিতে শেয়ারবাজারে সঠিক ভূমিকা রাখতে পারবে।

শেয়ারবাজারের উন্নয়নে মার্কেট মেকার গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমাদের দেশে মার্কেট মেকারের আইন আছে। কিন্তু মার্কেট মেকার নেই। যদি দেশে বড় বড় মার্কেট মেকার থাকত, তাহলে বর্তমানের এই পরিস্থিতি কাটানো যেতে। এটি শেয়ারবাজারের জন্য খুবই কার্যকর। যা বিশ্বের সবদেশেই আছে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৪৫৩ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged