বিনিয়োগ সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা

বাড়ছে সরকারি ইসলামিক বন্ডে বিনিয়োগ

সময়: রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯ ৯:৪২:১৯ পূর্বাহ্ণ


সাইফুল শুভ : সরকারি ইসলামিক বন্ডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ২০১৫ থেকে ক্রমান্বয়ে এ বন্ডে বিনিয়োগ করছে শরিয়াহ্ভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ইসলামিক বন্ডে প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ‘বাংলাদেশ গভর্মেন্ট ইসলামিক ইনভেস্টমেন্ট বন্ড (বিজিআআইবি)’ নামে বর্তমানে এটি চালু আছে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, এই বন্ডে বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, বিগত ৫ বছর যাবত ধারাবাহিকভাবে ইসলামিক বন্ডে বিনিয়োগ বাড়ছে। ২০১৫ সালে দুই হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা, ২০১৬ সালে তিন হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা, ২০১৭ সালে পাঁচ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা, ২০১৮ সালে আট হাজার ১১৯ কোটি টাকা এবং ২০১৯ সালে আট হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে।

২০০৪ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামিক বন্ড চালু করেছে। মূলত শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোই এ ফান্ডের বিনিয়োগকারী। বর্তমানে দু’ ধরণের ইসলামিক বন্ড রয়েছে। একটি ৩ মাস মেয়াদী, অপরটি ৬ মাস মেয়াদী।

নিয়মানুযায়ী যে কোনো প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি বা প্রবাসী বাংলাদেশীরা এই বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন। শরিয়াহভিত্তিক হওয়ায় এ বন্ডের কোনো নির্দিষ্ট মুনাফা ধরা হয় না। লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে মুনাফা নির্ধারিত হয়। প্রতি বৃহস্পতিবার বন্ডের নিলাম হয়ে থাকে।

এদিকে বন্ড মার্কেট উন্নয়নে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শিগগিরই বন্ড সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেন শুরু হবে। তখন যেকোনো বিনিয়োগকারী ইসলামিক বন্ড সেকেন্ডারি বাজার থেকে কিনতে পারবেন।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘এমআই মডিউল’ নামে নিজস্ব একটি বন্ড মার্কেট রয়েছে। বর্তমানে ওই মার্কেটে নিয়মিত সরকারি ট্রেজারি বন্ডগুলো লেনদেন হচ্ছে। এমআই মডিউলে বন্ডের বাজার মূলধন ২ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এরমধ্যে ইসলামিক বন্ড অন্যতম।

এদিকে শেয়ারবাজারে বন্ড লেনদেন অকার্যকর অবস্থায় থাকায় বিষয়টি আলোচনায় ওঠে আসে। পরবর্তীতে বিষয়টি বিএসইসির নজরে আসে। বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বন্ড মার্কেট সচল করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট’ বন্ড মার্কেট জনপ্রিয় করতে তৎপরতা শুরু করেছে। তারা এরই মধ্যে ‘কমপ্রিহেনসিভ ফ্রেমওয়ার্ক অন দ্যা ডেভেলপমেন্ট অব দ্যা বন্ড মার্কেট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে। ইতিমধ্যেই এটি অর্থমন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)-তে মতামতের জন্য জমা দেয়া হয়েছে।

ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট সূত্রে জানা গেছে, শেয়ারবাজারে বন্ড লেনেদেনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন যে প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে, তাতে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির একজন সদস্য রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর মতামতের উপর ভিত্তি করে প্রস্তাবনার উপর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরমধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জে পুণঃরায় লেনেদেন চালুর বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সকল পক্ষে পরামর্শের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৪৪১ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged