‘বিআইসিএমের গবেষণা দেশের শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিয়ে যাবে’

সময়: বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ৩০, ২০২১ ১:৩৩:০৮ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : চীন, জাপানসহ এশিয়ান দেশগুলো গবেষণার পেছনে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে। গবেষণা থেকে যে আবিষ্কার হয় সেটিই হয় আমাদের পরবর্তী বা ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রয়োজনের বস্তু বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট বিভিন্ন গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। গতকাল বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বিআইসিএম আয়োজিত ‘জার্নাল অব ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট অ্যান্ড গভর্ন্যান্স’ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ইন্সটিটিউটটি শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বাজারের প্রয়োজন অনুসারে প্রশিক্ষণ পরিচালনা এবং গবেষণা ও জার্নাল প্রকাশ করছে। এ সময় গবেষণা কাজকে উৎসাহিত ও ফান্ডিং করার আহ্বান জানান তিনি। একই সাথে জার্নালের মান ধরে রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, গবেষণার পেছনে সিঙ্গাপুর এখন প্রচুর বিনিয়োগ করছে যার পরিমাণ প্রায় ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার এবং দিন দিন সেটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিঙ্গাপুরের একটি বিশ্ববিদ্যালয় এখন এশিয়ায় টপ র‌্যাংকিং এ তো আসছেই- ধীরে ধীরে বিশ্বসেরা র‌্যাংকিং এ চলে আসবে। এবং তখন দেখা যাবে আমরা যারা আমাদের ছেলে মেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য এখন পশ্চিমা দেশগুলোতে পাঠাচ্ছি তখন, ঐসব দেশগুলোতে আর না পাঠিয়ে সিঙ্গাপুর কিংবা এশিয়ার দেশগুলোতে পাঠাবো। এজন্যই বলা হয় ‘নেক্সট সেঞ্চুরি ইজ এন এশিয়ান ইরা’ এবং এশিয়াকেই তখন সবাই উন্নত বিশ্ব হিসেবে জানবে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, পৃথিবীতে আমরা দুই রকম বিশ্ববিদ্যালয় দেখি। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং নির্ভর এবং কিছু গবেষণা নির্ভর। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতেও দেখা যায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যারা শুধু টিচিং নিয়ে থাকে। কিন্তু যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টপ র‌্যাংকিং এ আছে তারা সবাই গবেষণা নির্ভর। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং এর বেলায়ও এই গবেষণার দিকটিকেই গুরুত্ব দেয়া হয়। পূর্বে আমাদের দেশের গবেষণার উপর যে অর্থনৈতিক বা সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ছিলো এখন তা আর নেই। তখন গবেষণার জন্য যে ফান্ড লাগে তা অনেক বেশি, অনেক পুঁজি আর অনেকবার ব্যার্থতার পর হয়তো সফলতা আসে। বিভিন্ন ফান্ড থেকে যদি ৫ লাখ ১০ লাখ টাকা দেন সেটা দিয়েও কিছুই হয়না, কোটি টাকা দিয়েও ভালো গবেষণা হয় না। গবেষণার পেছনে অনেক সময় ও অধ্যবসায়েরও প্রয়োজন। অনেকবার ব্যার্থ হবার পর যখন সফলতা আসে , সেই অবস্থান পর্যন্ত যেতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন , শেয়ারবাজারে আধুনিক টেকনোলজির ব্যবহার করে কিভাবে আরও এগিয়ে নেয়া যায় সে বিষয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে। শেয়ারবাজারে প্রযুক্তিগত দক্ষ জনবল তৈরিতে বিআইসিএম ভূমিকা রাখতে পারে।

অনুষ্ঠানে জার্নাল কমিটির সম্পাদক ড. মাহফুজুল হক, অধ্যাপক, একাউন্টিং এন্ড ইরফরমেশন সিস্টেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জার্নালটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে মান নিয়ন্ত্রণ করেই মানসম্মত এই জার্নালটি প্রকাশ করা হয়েছে। যা ভবিষ্যৎতে এই সেক্টরে অনন্য ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার বলেন, বাংলাদেশে একটি দক্ষ, স্বচ্ছ, প্রতিযোগিতামূলক এবং সমৃদ্ধ শেয়ারবাজার গঠনে প্রয়োজনীয় পেশাগত উৎকর্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইন্সটিটিউট নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জার্নালটি প্রকাশের মাধ্যমে ইন্সটিটিউটের দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন আজ বাস্তব হলো।

অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন বিআইসিএম জার্নালে ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও বিআইসিএম এর খন্ডকালীন গবেষণা ফেলো ড. সুবর্ণ বড়ুয়া। অনুষ্ঠানটিতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক শাব্বির আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুল মঈন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্মসচিব রুখসানা হাসিন, অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও শুভ্র কান্তি চৌধুরী, এফসিএ। অনুষ্ঠান শেষে বিএসইসির চেয়ারম্যান বিআইসিএম বঙ্গবন্ধু ফিনকুইজের পুরস্কার বিতরণীর অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৪৬ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged