নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারের উন্নয়নে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আবারও ফ্লোর প্রাইস (দর পতনের সর্বনিম্ন সীমা) নির্ধারণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে এসএমই বোর্ড এই নির্দেশনার বাহিরে থাকবে। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সাক্ষরিত এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। যা আগামিকাল থেকেই কার্যকর।
বিএসইসির আদেশে বলা হয়েছে, আজকেরসহ বিগত ৫ দিনের ক্লোজিং প্রাইসের গড় দর হবে প্রতিটি সিকিউরিটিজের ফ্লোর প্রাইস। আগামী কার্যদিব থেকে এর উপরে সিকিউরিটিজের দর স্বাভাবিক হারে উঠানামা করতে পারবে। তবে ফ্লোর প্রাইসের নিচে নামতে পারবে না। তবে কোম্পানির বোনাস শেয়ার বা রাইট শেয়ারের কারনে ফ্লোর প্রাইসে থাকা সিকিউরিটিজের দর সমন্বয় হবে।
এদিকে নতুন শেয়ারের ক্ষেত্রে প্রথম দিনের লেনদেনের ক্লোজিং প্রাইসকে ফ্লোর প্রাইস হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
অন্যদিকে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনার বাহিরে থাকবে এসএমই বোর্ড। অর্থাৎ এসএমইতে বিদ্যমান নিয়মে উঠা-নামা করবে।
এর আগে ২০২০ সালে দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলো শেয়ারবাজারে ধস ঠেকাতে ওই বছরের ১৯ মার্চ সে সময়ের কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়।
করোনাভাইরাসের কারনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের শেয়ারবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে সেটা ভয়াবহ রূপ ধারন করে ২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে রোগী শনাক্ত হওয়ার পরে। এরপরই বিনিয়োগকারীরা যার যার অবস্থান থেকে শুধু বিক্রি করার চেষ্টাই করে গেছেন। বাজারে দেখা দেয় ক্রেতার ভয়াবহ সংকট। তবে এখন করোনাভাইরাস নিয়ে সেই আতঙ্ক নেই। এছাড়া নতুন কমিশনের বেশ পদক্ষেপ বাড়তি আস্থা যুগিয়েছে। যাতে করে শেয়ারবাজার এগিয়ে যাচ্ছে।
দেখা যায়, ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচকটি ৪৭৬৮ পয়েন্টে ছিল। যেটা করোনা আতঙ্কে কমতে কমতে ৮ মার্চ এসে দাড়াঁয় ৪২৮৭ পয়েন্ট। আর ওইদিন দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পরে ৯ মার্চ একদিনেই ২৭৯ পয়েন্ট কমে যায়। যা ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে ১ম রোগী মারা যাওয়ার দিন নেমে যায় ৩৬০৪ পয়েন্টে। আতঙ্কিত শেয়ারবাজারের এমন পতন ঠেকাতে ১৯ মার্চ চালু করা হয় ফ্লোর প্রাইস।
এরপরে ৩ ধাপে বর্তমান কমিশন ফ্লোর প্রাইস তুলে নিয়েছিল। প্রথম দফায় ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ৬৬টি কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন। এরপরে ওই বছরের ৩ জুন ফ্লোর প্রাইসে থাকা বাকি ৩০ কোম্পানি থেকে নির্দেশনাটি তুলে নেয় বিএসইসি। তৃতীয় ধাপে এসে ১৭ জুন শেয়ারবাজার থেকে পুরোপুরি ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়।