বীমা খাতে দক্ষ জনবল সৃষ্টিতে ৮ পদক্ষেপ

সময়: রবিবার, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯ ১২:০৫:২৫ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : কারিগরি ও কৌশলগত বিষয় হওয়া সত্ত্বেও বীমা খাতে দক্ষ লোকবল গড়ে ওঠেনি। মূলত অপেশাদার ও অদক্ষ লোকবলের কারণেই খাতটি কাক্সিক্ষত সফলতা পাচ্ছে না। তবে দেরিতে হলেও বিষয়টি সরকারের নজরে পড়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বীমা খাতে দক্ষ জনবল সৃষ্টিতে ৮ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকারের এ সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারণী মহল।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় পদক্ষেপগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এ সভায় উপস্থিত ছিলেন সরকারি ও বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা। মতবিনিয়ম সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবীর হোসেন, কর্তৃপক্ষের সব সদস্য ও কর্মকর্তারা, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমির পরিচালক এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের সভাপতি।

এ প্রসঙ্গে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সদস্য বোরহান উদ্দীন আহমেদ দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিনকে বলেন, বীমা খাতের প্রসারে প্রধান অন্তরায় হলো দক্ষ জনবলের অভাব। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়ন শুরু হবে।

সভায় প্রয়োজনীয় যেসব পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলো হলো- বীমা পেশায় বাস্তবসম্মত উচ্চতর ডিগ্রি প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমিকে আরো শক্তিশালী করা। এরইমধ্যে যার কাজ বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পের অধীনে চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমিকে আইডিআরএ’র অধীনে নিতে হবে। বীমা একাডেমির জন্য যুগপযোগী কারিকুলাম তৈরি এবং মানসম্মত ডিগ্রি প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এফিলিয়েশন গ্রহণ করতে হবে। দেশে একচ্যুয়ারির অভাব রয়েছে। বীমা খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে একচ্যুয়ারি তৈরির জন্য বেসরকারি বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে, প্রয়োজনে সরকারও সহযোগিতা করবে। দেশে বা বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে একচ্যুরিয়াল সাইন্স পড়ার জন্য তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে স্কলারশিপের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশের একচ্যুরিয়াল বিজ্ঞানের উন্নয়নে করণীয় নির্ধারণ এবং প্রয়োজনে এ বিষয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে। দেশের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার কারিকুলামে বীমা বিষয় যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত দুই বীমা করপোরেশনে নতুন কোনো লোকবলই নিয়োগ হয়নি। পাকিস্তান আমলে যারা ছিলেন তাদের দ্বারাই করপোরশেন দুটি চালিয়ে নেয়া হচ্ছিল। ২০০০ সালের দিকে তাদের প্রায় প্রত্যেকেই অবসরে চলে যান এবং পরবর্তীতে প্রাইভেট কোম্পানিগুলোরও নেতৃত্বে আসনে তারা। কিন্তু বয়সের ভারে তাদের অনেকেই এখন নেই। ফলে আর কোনো দক্ষ লোকবল তৈরি না হওয়ায় বীমা খাতে ক্রমেই অদক্ষ ও অপেশাদার লোকজন ঢুকে পড়ে। যার ফলে স্বাধীনতার এতো বছর পরেও দেশের বীমা খাত ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৪৬০ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged