সাধারণ বীমা কোম্পানির অতিরিক্ত অ্যাকউন্ট বন্ধের সময়সীমা ১২ আগস্ট

সময়: বৃহস্পতিবার, আগস্ট ৮, ২০১৯ ৮:৪২:৪৯ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিদেক : সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোকে তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়া অতিরিক্তগুলো বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে। একইসঙ্গে ব্যাংক হিসাবগুলো বিন্যাস করে আগামী ১২ আগস্টের মধ্যে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে (আরইডিআরএ) জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত ২ জুলাই আইডিআরএ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর আগে বীমা মালিকদের আপত্তির মুখে দুই দফায় প্রজ্ঞাপনটি সংশোধন করা হয়েছে বলে জানা গেছে আইডিআরএ সূত্রে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে প্রিমিয়ামের টাকা জমা করতে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো যে কোনো পৃথক তিনটি তফসিলি ব্যাংকে একটি করে সর্বোচ্চ তিনটি হিসাব রাখতে পারবে। এর বাইরে অতিরিক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।
জানা যায়, বীমাখাতে আর্থিক অনিয়ম রোধে এ উদ্যোগ নিয়েছে আইডিআরএ। সংস্থাটির মতে, বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে অতিরিক্ত কমিশন দেয়ার প্রবণতা বাড়ছেই। কোনো কোনো কোম্পানি ১০০ টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই কমিশন দেয়। তবে এর কোনো হিসাব নেই। অথচ আর্থিক প্রতিবেদনে দেখানো হয় আইন মেনেই ১৫ শতাংশ কমিশন দেয়া হয়েছে। অবৈধভাবে দেয়া এ কমিশনের হিসাব মেলাতে কোম্পানিগুলো তাদের সংগ্রহ করা প্রিমিয়াম প্রদর্শন করে না। বরং কোম্পানিগুলো যে পরিমাণ পলিসি করে, কাগজপত্রে তার অর্ধেকেরও কম দেখানো হয়। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পলিসির তথ্যই গোপন রেখে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। এসব হিসাবের মাধ্যমেই পরিশোধ করা হয় অতিরিক্ত কমিশনসহ কোম্পানির নানা ধরনের অবৈধ ব্যয়ের অর্থ।
এ বিষয়ে আইডিআরএ’র কর্মকর্তারা জানান, বীমা খাতে কমিশন বাণিজ্য বন্ধের জন্যই নতুন এ পদক্ষেপ। আশা করা যাচ্ছে কোম্পানিগুলো নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই অতিরিক্ত অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে।
আইডিআরএ’র জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মূলধন সংরক্ষণের জন্য একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং অন্যান্য আয় জমাকরণের জন্য অপর একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রাখা যাবে। এছাড়া দাবি পরিশোধের জন্য একটি ও ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের জন্য একটি ব্যাংক হিসাব রাখা যাবে। সেক্ষেত্রে প্রিমিয়াম জমাকরণ হিসাব থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ ওই হিসাব দুটিতে ট্রান্সফার করে নিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বীমা দাবি, কমিশন ও বেতন-ভাতাদির টাকা নগদে পরিশোধ করা যাবে না। তাছাড়া শাখা কার্যালয়ের খরচ নির্বাহের ক্ষেত্রে প্রতিটি শাখায় একটি করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রাখা যাবে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রিমিয়াম হিসাব থেকে ক্রসড চেক বা ফান্ড ট্রান্সফার ছাড়া অন্য কোন অর্থ ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করা যাবে না। আর শাখা কার্যালয়ের অন্য যে কোনো আয়, কমিশন ফেরত ইত্যাদি ব্যাংক হিসাবে জমাকরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এদিকে প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর সব ধরনের লেনদেন ক্রসড চেকের মাধ্যমে করতে হবে। আর দাপ্তরিক বিশেষ প্রয়োজনে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ উত্তোলন করা যেতে পারে। তবে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভার সম্মানি ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য ব্যয় নগদে করা যাবে। অবশ্য বিনিয়োগ সংক্রান্ত এফডিআরের জন্য ব্যাংক হিসাব খোলার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে জনগণের অংশের শেয়ার বা আইপিও, রাইটস ইস্যু এবং লভ্যাংশ প্রদানে পৃথক ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিতে হবে। পাশাপাশি ওই ব্যাংক হিসাবের তথ্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। তবে অন্য যে কোনো বিষয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পূর্বে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) চেয়ারম্যান শেখ কবীর হোসেন বলেন, অতিরিক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করে ১২ আগস্টের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে। আশা করি নিয়ন্ত্রণ সংস্থার এ নির্দেশনা কোম্পানিগুলো অনুসরণ করবে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৪৭৪ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged