সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগ শিক্ষা ভূমিকা রাখছে : বিএসইসি চেয়ারম্যান

সময়: সোমবার, অক্টোবর ৭, ২০১৯ ৯:২৬:২৬ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগ শিক্ষা ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)- এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। তিনি বলেন, এ জন্য পুঁজিবাজারের উন্নতির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকলের বিনিয়োগ শিক্ষা নিতে হবে। তাই এবারের বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট সকলকেই বিনিয়োগ শিক্ষার জন্য টার্গেট করা হয়েছে।
গতকাল রোববার রাজধানীর বিএসইসি কার্যালয়ে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিএসইসি’র কমিশনার স্বপন কুমার বালা, খন্দকার কামালউজ্জামানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে। আবার স্টেকহোল্ডারদের মাঝেও জবাবদিহিতা তৈরি হচ্ছে। কারণ কমপ্লায়েন্স পরিপালন না করলে শাস্তির আওতায় পড়ার বিষয়টি তারা বুঝতে পারছেন। কাজেই সুশাসন বৃদ্ধি করতে বিনিয়োগ শিক্ষা ভূমিকা রাখছে। আমরা এখন পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। একটি শক্তিশালী শেয়ারবাজারের জন্য যে ধরনের বিনিয়োগকারী গোষ্ঠী দরকার, তা আমরা ১০ বছর পর দেখতে পাবো। সে সময় প্রত্যেকটি স্টেকহোল্ডারের জবাবদিহির ক্ষেত্রে কার কী দায়িত্ব, তা সুস্পষ্টভাবে পরিষ্কার হয়ে যাবে। এ জন্য এবারের আয়োজনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, স্টক এক্সচেঞ্জ, মার্চেন্ট ব্যাংকস, ব্রোকারেজ হাউজ, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ও ইস্যুয়ার কোম্পানিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিনিয়োগ শিক্ষার জন্য টার্গেট করা হয়।
খায়রুল হোসেন বলেন, প্রথমবার আমরা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নিয়ে মিছিলের মতো করে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালন করেছিলাম। পাশাপাশি শেয়ারবাজার নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ধারণা দেয়া হয়। তবে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ চালুর আগে থেকেই আমরা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কার্যক্রম আয়োজন করে আসছি। তবে সেটা আনুষ্ঠানিক রুপ পায় ২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে। এরপরে আইওএসকো একই বছর থেকে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ চালুর পর থেকে বিএসইসিও পালন করে আসছে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম চালুর পরে সচিব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর জন্য আলাদা অনুষ্ঠান করার অনুরোধ এসেছে। কাজেই ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি কার্যক্রম শুধুমাত্র অ আ ক খ বিষয়েই ধারণা দেয় নয়। এটি শেয়ারবাজারের গুরুত্ব, কোথা থেকে বাহির হয়, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে শেয়ারবাজার কেনো গুরুত্বপূর্ণ, ব্যাংক ঋণ কেনো বন্ধ করতে হবে, কেনো ঋণ খেলাপির ক্ষেত্রে কিছু আদায় করা যায় না ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞানের সীমা বৃদ্ধি করে। এর মাধ্যমে বর্তমান জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা দূর হয়ে পরিধি যখন বাড়বে, তখন অর্থনীতি বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, আমেরিকার শিল্পায়নে শেয়ারবাজারের ভূমিকা ৫৫ শতাংশ। যেখানে আমাদের শেয়ারবাজারের অবদান ১৫ শতাংশ বলা হয়। প্রকৃতপক্ষে ১০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। কারণ আমাদের দেশে শেয়ারবাজারে কোম্পানিগুলোর বর্তমান আকারের সঙ্গে জিডিপির তুলনা করে ওই অবদান গণনা করা হয়। কিন্তু তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো শুরুতে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করেনি। সেগুলো ব্যবসা চালু হওয়ার পরে শেয়ারবাজারে এসেছে। আগে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের নিজস্ব অর্থায়ন ও ব্যাংক ঋণ দিয়ে কার্যক্রম চালিয়েছে।
এবারের বিনিয়োগকারী সপ্তাহ অত্যন্ত ফলপ্রসু ছিল জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমি নিজে চারটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলেও পুরো সপ্তাহের সব অনুষ্ঠানেই দৃষ্টি ছিল। আমারা ভালো সাড়া পেয়েছি। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আগ্রহ দেখেছি। ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যেও আগ্রহ ছিল। এছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জ, সিডিবিএল, বিএমবিএ, বিআইসিএম থেকে শুরু করে অনেকেই বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
অনুষ্ঠানে কমিশনার হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারী সপ্তাহ নিয়ে ভালো অনুষ্ঠান করা যাবে। এই অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা এবং গুরুত্ব অনেক বেশি। এতে বিনিয়োগকারীসহ স্টেকহোল্ডারদের বেশি মাত্রায় সম্পৃক্ত করা গেলে, ফলাফল আসবে। আমাদের আর্থিক জ্ঞানের সাক্ষরতার হার যেহেতু ১৮ শতাংশের মধ্যে, তাহলে বুঝতে হবে ব্যাপক সংখ্যক শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর আর্থিক সাক্ষরতা নেই। তাদের মধ্যে এই সাক্ষরতার হার বাড়াতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘বিনিয়োগকারী অভিযোগ নিষ্পত্তির মডিউল’ ফলোদায়ক ও কার্যকর। এই মডিউলটি চালুর ২ দিনের মধ্যেই ১টি সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। সেটি সাধারণ প্রক্রিয়ায় করতে গেলে হয়তো ১ মাস লাগতো। কারণ এতে অনেক প্রসিডিউর অনুসরণ করতে হতো।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৪২৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged