৯৪ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে : প্রধানমন্ত্রী

সময়: বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১৪, ২০১৯ ৯:২৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রায় ৯৪ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাতে পেরেছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এখন আমরা প্রায় ২২ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছি। আমরা কারও কাছে ভিক্ষা চেয়ে, হাত পেতে চলতে চাই না। আমরা আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চাই, মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলতে চাই।’
গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাতটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও ১০টি জেলার ২৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ভিডিও চিত্র উপস্থাপনের মাধ্যমে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী গতকাল ৭৯০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন। এগুলো হচ্ছেÑ আনোয়ারা ৩০০ মেগাওয়াট, রংপুর ১১৩ মেগাওয়াট, কর্ণফুলী ১১০ মেগাওয়াট, শিকলবাহা ১০৫ মেগাওয়াট, পটিয়া ৫৪ মেগাওয়াট, গাজীপুরে নির্মিত রুরাল পাওয়ার কোম্পানির ১০০ মেগাওয়াট এবং তেঁতুলিয়া আট মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র।
এছাড়া শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধন হওয়া ২৩ উপজেলা হচ্ছেÑ বগুড়ার শেরপুর, গাবতলী, শিবগঞ্জ, চট্টগ্রাম জেলার লোহাগড়া, ফরিদপুর জেলার মধুখালী, নগরকান্দা, সালথা, গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি, গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি উপজেলা, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর, নবীগঞ্জ উপজেলা, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ও মহেশপুর উপজেলা, কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলা, নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম, লালপুর, সিংড়া উপজেলা, নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ উপজেলা, পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া, কাউখালী, ইন্দুরকানী উপজেলা।
অতীতে বিদ্যুৎ সমস্যার প্রকটতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সময় মাত্র ১৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হত। সারাদেশ অন্ধকারে ছিল। তখন আমরা উদ্যোগ নিলাম শুধু সরকারিভাবে না, বেসরকারিভাবেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে।’
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করলাম, তখন দেখলাম যে ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট রেখে গিয়েছিলাম, তার থেকে উৎপাদন কমে গেছে। সেখান থেকে যাত্রা শুরু করে আজকে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করি প্রায় ২২ হাজার মেগাওয়াট। তার সঙ্গে আজকে যোগ হবে ৭৯০ মেগাওয়াট। প্রায় ২২ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এখন উৎপাদন করতে পারছি। আমরা ইতোমধ্যে প্রায় ৯৪ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছতে পেরেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে যাচ্ছি। বিতরণ এবং সঞ্চালনের ব্যবস্থা করছি। উৎপাদনের সঙ্গে বিদ্যুৎ সঞ্চালন এবং বিতরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই বিষয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি এবং তার শুভফল দেশের মানুষ পাচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ যাতে এই ফলটা ভোগ করতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। উন্নয়ন শুধু শহরে বসবাস করা বা রাজধানীতে বসবাস করা কিছু মানুষেরই উন্নয়ন না, উন্নয়নটা হচ্ছে একেবারে গ্রাম পর্যায়ের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, আর্থ-সামাজিক উন্নতি করা, তাদের জীবনমান উন্নত করা, কর্মসংস্থান করা। তাদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ সব ধরনের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা।’
উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারের অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব থেকে অগ্রাধিকার দিয়েছি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এখন খাদ্য-পুষ্টি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। কারও কাছে ভিক্ষা চেয়ে হাত পেতে চলতে চাই না। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজের খাদ্য উৎপাদন করে আমরা সরবরাহ করতে চাই। আমরা আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চাই। মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলতে চাই। যেটা আমাদের জাতির পিতা শিখিয়েছেন।’
উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্স-এর মাধ্যমে একে একে ফরিদপুর, নাটোর, পিরোজপুর ও নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সংযুক্ত হয়ে মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকার, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৪০০ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged