walton,

বিশ্লেষকদের অভিমত

শেয়ারবাজার গতিশীল করবে ওয়ালটন

সময়: রবিবার, মার্চ ১৫, ২০২০ ১:৪৯:৩৮ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ দিন ধরে শেয়ারবাজারে সূচক ও লেনদেন চলছে মন্থর গতিতে। মাঝে মধ্যে বড় ধরনের সংকটেও পড়ছে বাজার। এ সংকট থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দেশের ব্যাংকগুলোকে বাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশনা জারি করেছে, যা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর এর মধ্যে দেশের স্বনামধন্য কোম্পানি ওয়ালটন বাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে। ওয়ালটনের শেয়ার লেনদেন শুরুর মাধ্যমে সূচক, লেনদেন ও বাজার মূলধনে একটি মাইলফলক সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা বাজারকে গতিশীল করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শেয়ারবাজারের স্বার্থে গত জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)এর চেয়ারম্যানসহ সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে বেশ কিছু বিষয় গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি হলো- বাজার দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীল রাখতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি, বহুজাতিক এবং সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানি বাজারে আনার উদ্যোগ নেয়া।
এ বৈঠকের আগেরই দেশের উন্নয়নে অংশীদার হতে শেয়ারবাজারে আসার সিদ্ধান্ত নেয় ওয়ালটন, যা দেশের ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন স্বনামধন্য একটি কোম্পানি। বর্তমান বাজারে তালিকাভুক্ত যেসব বড় কোম্পানির শেয়ার দর বাড়া-কমার সঙ্গে সঙ্গে সূচক ওঠা-নামা করে তেমনি ওয়ালটন বাজারে আসার পর কোম্পানিটি সূচকে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া ওয়ালটন বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। যাতে বাজার গতিশীল হতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে ওয়ালটন।
অর্থনীতিবিদ ও শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারের চাহিদা বাজারে সব সময় আছে। এ জন্য বাজার স্থিতিশীল করতে হলে আইপিও’র মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি, সরকারি লাভজনক কোম্পানি বাজারে আনার ব্যবস্থা করা উচিত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে দীর্ঘ দিন ধরে আইপিও’র মাধ্যমে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি আসছে না। যেসব শেয়ার বাজারে আসছে সেগুলোর অধিকাংশই লেনদেন শুরুর পরপর ফেসভ্যালুর নিচে লেনদেন হয়। আর এতে বাজারে আস্থা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাই আইপিও’র মাধ্যমে বাজারে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি আনার দাবী উঠেছে। আর এমন মুহুর্তে দেশের ইলেক্টনিক্স মার্কেটে শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি ওয়ালটন বাজারে আসছে, যা এ খাতের বড় একটি কোম্পানি। এ ধরনের কোম্পানি বিতর্কিত না করে বাজারে আসতে দেয়া উচিত, যা বাজার গতিশীল করতে ভূমিকা রাখবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, দেশের বাজারে ওয়ালটন একটি জনপ্রিয় কোম্পানি। অনেক দিন পরে বাজারে এমন একটি বড় কোম্পানি আসছে। যারা কোম্পানি বিডিংয়ে অংশ নিয়েছেন তারা জেনে শুনেই দর নির্ধারণ করেছেন, এটাকে বিতর্কিত না করে বাজারে আসতে দেয়া উচিত। এ ধরনের কোম্পানি বাজারে এলে সূচক ও লেনদেনে ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা আছে।
ওয়ালটন বাংলাদেশেই উচ্চমানের ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এতে কমেছে আমদানি ব্যয়। ফলে সাশ্রয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা,, বেড়েছে রপ্তানি আয়।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি রোড শো করে ওয়ালটন। এরপর গত জানুয়ারিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিটির বিডিংয়ের অনুমোদন দেয়া হয়। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ওয়ালটনের আইপিও বিডিং হয়েছে। এতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ওয়ালটনের শেয়ারের কাট অফ প্রাইস ৩১৫ টাকা নির্ধারণ হয়েছে।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৫৬ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged