আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম : নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে কঠোর হতে হবে

সময়: সোমবার, আগস্ট ১৯, ২০১৯ ৭:২৩:১৭ পূর্বাহ্ণ


আবারও আলোচনায় এসেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির ‘আইসিবি ইসলামী ব্যাংক’। ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদনে বেশ কিছু অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই)। শুধু অসঙ্গতিই নয়, বর্তমানে ব্যাংকটি লোকসানে রয়েছে এবং এতে খেলাপি ঋণের পরিমাণও অনেক বেড়ে গেছে। এমতাবস্থায় ব্যাংকটির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করে বর্তমানে এটি বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছে ডিএসই।
প্রসঙ্গত: নানা কারণে ‘আইসিবি ইসলামী ব্যাংক’ (সাবেক ‘ওরিয়েন্টাল ব্যাংক’) ব্যাংক পাড়া ও পুঁজিবাজারে আলোচিত। বড় ধরনের অনিয়মের আশঙ্কায় ১৯৯৪ সালে বেসরকারি খাতের ‘ওরিয়েন্টাল ব্যাংক’-এ পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরও বড় ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটায় ২০০৬ সালে পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরবর্তী সময়ে ২০০৮ সালে এর নাম পরিবর্তন করে ‘আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক’ রাখা হয়।

আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের চলতি পঞ্জিকা বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৬ পয়সা। কর-পরবর্তী লোকসান হয়েছে ১০ কোটি ৪৮ লাখ ৬ হাজার ৭৭৫ টাকা। শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ১৬ টাকা ৬৩ পয়সা নেতিবাচক। শেয়ারহোল্ডার ইক্যুইটি নেতিবাচক রয়েছে ১ হাজার ১০৫ কোটি ৫৪ লাখ ২৭ হাজার ৩৪৩ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি নেগেটিভ নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ১৯ পয়সা।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত মার্চ শেষে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূলধন ঘাটতি রয়েছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি ১ হাজার ৫৬৯ কোটি ৯ লাখ টাকা। এছাড়া ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭০৭ কোটি টাকা, শতকরা হিসেবে ৮২ শতাংশের বেশি।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আরও দুটি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে ডিএসই। কোম্পানি দুটি হচ্ছেÑ বস্ত্র খাতের ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানি ‘আলহাজ্ব টেক্সটাইল’ ও ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি দুলামিয়া কটন স্পিনিং মিলস।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানিকে তার নিজস্ব ইমেজের স্বার্থেই আর্থিক হিসাব ও কোম্পানির বিষয়ে স্বচ্ছ হওয়া দরকার। একইসঙ্গে সার্বিকভাবে পুঁজিবাজারের স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি-সহ উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে এবং আর্থিক হিসাবে অনিয়ম প্রতিরোধে কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে ।