নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মধ্যে নৌপথে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ দাউদকান্দি এবং ত্রিপুরার সোনামুড়া নৌপথ প্রটোকল রুটের আওতায় এই পণ্য পরিবহন হচ্ছে। গত শনিবার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস লিমিটেডের সিমেন্ট রপ্তানির মাধ্যমে এই রুটের পরীক্ষামূরক চলাচল শুরু হয়। আর তার মাধ্যমে ইতিহাসে অংশে পরিণত হয় প্রিমিয়ার সিমেন্ট। প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস লিমিটেড সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস সোনামুড়ায় প্রিমিয়ার সিমেন্টের প্রথম চালানটি গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ দাউদকান্দি এবং ত্রিপুরার সোনামুড়া নৌপথ প্রটোকল রুটের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় প্রিমিয়ার সিমেন্টের প্রথম রপ্তানি চালানটি ট্রায়াল রান হিসাবে শনিবার পাঠানো হয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব ভার্চুয়াল মাধ্যমে বলেন, “এ উদ্যোগটি উত্তর পূর্ব অঞ্চলের সাথে আমাদের যোগাযোগকে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করবে এবং বাংলাদেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যকেও বাড়িয়ে তুলবে।”
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব দিনটিকে একটি ঐতিহাসিক দিন হিসাবে অভিহিত করেছেন। তিনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন এ মাইলফলক তৈরিতে সহায়তা করায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ধন্যবাদ জানান।
হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, “নতুন জলপথে পুরোদস্তুর পণ্য পরিবহণ শুরু হয়ে গেলে সামগ্রিকভাবে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। এভাবে পণ্য পরিবহণে খরচ কম, পরিবেশ সহায়ক। তাছাড়া এই জলপথ-বাণিজ্য দুই দেশেরই স্থানীয় অর্থনৈতিক বিকাশে সহায়ক হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।”
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নদীপথে পণ্য পরিবহণের জন্য ১৯৭২ সালে প্রটোকল সই হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে এর মাধ্যমে যোগাযোগ বাড়ানো হবে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর চেষ্টা করা হবে।
গত এক বছরে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সেই সব প্রটোকল রুট মারফত প্রায় সাড়ে তিন মিলিয়ন (৩৫ লাখ) মেট্রিক টন পণ্য পরিবহণ করা হয়েছে। এ বছর মে মাসে সেই প্রটোকল রুটে নতুন সংযোজন হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আমিরুল হক বলেন, নৌপথে ত্রিপুরায় পণ্য রপ্তানির বিষয়টি শুধু প্রিমিয়ার সিমেন্টের নয়, দেশের জন্য ঐতিহাসিক অর্জনের দিন। ইতিহাসের অংশ হতে পেরে তারা অত্যন্ত আনন্দিত।
তিনি বলেন, নৌপথে পণ্য পরিবহণ পরিবেশবান্ধব এবং ব্যয়-সাশ্রয়ী। তাই আমরা সারা বছর এই রুটে পণ্য রপ্তানিতে আগ্রহী। তবে তার জন্য বেশ কিছু কাজ করতে হবে। এই রুটে কিছু ব্রিজ আছে যেগুলোর উচ্চতা বেশ কম। ফলে বর্ষাকালে জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে এটি একটি বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে এই নৌপথের কোথাও কোথাও পানির গভীরতা কমে যায়। তাই নিয়মিত ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। আর এই ড্রেজিংগুলো যাতে সত্যিকার অর্থেই নাব্যতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে, সে লক্ষ্যে ড্রেজিং কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটর করা জরুরি।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান