ইউএমপি’তে ব্যয় বাড়ছে, পর্যালোচনা কমিটি গঠন বিআইএ’র

সময়: রবিবার, অক্টোবর ২০, ২০১৯ ৯:০৩:৪৬ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ইউনিফাইড ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্ম সার্ভিস’ (ইউএমপি)-এর জন্য বীমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয় বাড়বে। বিষয়টি জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার দেশের সব বীমা কোম্পানিকে চিঠি দিয়েছে ‘বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন’ (বিআইএ)।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ইউনিফাইড ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্ম সার্ভিসটির খরচ পুনঃপর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন-এর পাঁচ জন প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রতিটি বীমা কোম্পানির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আইটি সার্ভিস রয়েছে। যার মাধ্যমে বীমা গ্রাহকদের এসএমএস সার্ভিস দেয়া হচ্ছে। এতে করে প্রতিটি কোম্পানি এসএমএস বাবদ ২৬ থেকে ৪০ পয়সা খরচ করে থাকে। নতুন করে ইউএমপি সার্ভিসের মাধ্যমে এসএমএস প্রদান করা হলে এ বাবদ খরচ বহুলাংশে বেড়ে যাবে। ফলশ্রুতিতে অতিরিক্ত খরচ ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের উপর প্রভাব পড়বে। এ অবস্থায় ইউএমপি সার্ভিস চালু করা হলে কী পরিমাণ খরচ বাড়বে, তা জানার জন্য নির্ধারিত ছকে একটি তুলনামূলক বিবরণী আজ রোববারের মধ্যে পাঠানোর জন্য সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বিআইএ।

জানা যায়, বীমা গ্রাহকদের প্রিমিয়ামের টাকা পরিশোধ সংক্রান্ত তথ্য মুঠোফোনে খুদে বার্তা মাধ্যমে দেয়ার লক্ষ্যে ইউনিফাইড ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্ম বা ইউএমপি’র উদ্যোগ নিয়েছে ‘বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ’ (আইডিআরএ)। এ জন্য প্রতিটি পলিসির বিপরীতে বছরে ৩২ টাকা চার্জ গুণতে হবে বীমা কোম্পানিগুলোকে। এর সঙ্গে ভ্যাট-ট্যাক্স মিলিয়ে প্রতিটি গ্রাহককে ম্যাসেজ পাঠাতে বছরে খরচ হবে ৪০ টাকা।

এ প্রসঙ্গে বিআইএ প্রেসিডেন্ট শেখ কবীর হোসেন ‘দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন’-কে বলেন, ‘ইউএমপি সার্ভিস চালু হলে ব্যয় কী পরিমাণে বাড়বেÑ তা আমরা কোম্পানিগুলোকে জানাতে বলেছি। বিষয়টি আমরা আইডিআরএ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানিয়েছি। দেখা যাক কী হয়।’

কর্তৃপক্ষ বলছে, উন্নত গ্রাহকসেবা, ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনায়ন, এজেন্ট কর্তৃক প্রিমিয়াম আহরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বীমা কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থা সুদৃঢ় করার অংশ হিসেবে ইউএমপি’র উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইউএমপি’র মাধ্যমে প্রত্যেক বীমা গ্রাহককে এসএমএস’র মাধ্যমে লেনদেনের নোটিফিকেশন পাঠানো হবে। এর ফলে স্বচ্ছতা ও আস্থা অনেকাংশেই প্রতিষ্ঠিত হবে, যা দ্বারা বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি উপকৃত হবে। ইউএমপি বাস্তবায়নের কারণে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে কোম্পানিগুলোকে পৃথকভাবে কোন যন্ত্রপাতি স্থাপন করতে হবে না। ফলে খরচ কমে আসবে এবং তামাদি পলিসিও উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে।

জানা যায়,এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিটি বীমা কোম্পানির দু’জন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেবে আইডিআরএ। বীমা কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি কোম্পানি বীমা পলিসির প্রিমিয়ামের বিপরীতে গ্রাহকদের এসএমএস সেবা দেয়া শুরু করেছে। এক্ষেত্রে এসএমএস’র জন্য কোম্পানির যে অর্থ খরচ হচ্ছে, আইডিআরএ তার থেকে কয়েকগুণ বেশি খরচ নির্ধারণ করেছে। ইউএমপি বাস্তবায়নে বীমা কোম্পানিগুলোকে তাদের প্রতিটি পলিসির বিপরীতে ত্রৈমাসিকভিত্তিক তথা প্রতি ৩ মাসে ৮ টাকা হারে খরচ করতে হবে। পে-অর্ডার অথবা পে-চেকের মাধ্যমে প্রথম মাসের ১ তারিখের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ডিওইআর সার্ভিস লিমিটেড বরাবর এ টাকা পরিশোধ করতে হবে। তবে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে এ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

বীমা কোম্পানিগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে প্রতিটি পলিসি গ্রাহককে সাধারণভাবে বছরে ২ থেকে ২৪টি এসএমএস পাঠানো হয়। অর্থাৎ বাৎসরিক প্রদেয় প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের আগে প্রিমিয়াম পরিশোধে তাগাদা দেয়ার জন্য একবার এবং প্রিমিয়াম গ্রহণের পর গ্রাহককে তা নিশ্চিত করতে আরেকবার নোটিফিকেশন পাঠানো হয়।

একইভাবে ষান্মাসিক প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে বছরে ৪টি, ত্রৈমাসিক প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে ১২টি এবং মাসিক প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে ২৪টি এসএমএস পান বীমা গ্রাহকরা। প্রতিটি এসএমএস পাঠাতে বীমা কোম্পানির খরচ হয় ভ্যাট-ট্যাক্সসহ ৫৭ পয়সা। অর্থাৎ কোন পলিসি গ্রাহককে সর্বোচ্চসংখ্যক এসএমএস পাঠানো হলেও কোম্পানির খরচ হয় বছরে ১৩ টাকা ৬৮ পয়সা।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৫৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged