কর্মক্ষম জনশক্তিই বিনিয়োগের মূল আকর্ষণ : প্রধানমন্ত্রী

সময়: মঙ্গলবার, নভেম্বর ১২, ২০১৯ ৭:৩৩:৪৫ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের কর্মক্ষম জনশক্তিই বিনিয়োগের জন্য সবাইকে আকর্ষণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ’ (বেপজা)-এর গভর্নর বোর্ডের ৩৪তম সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এরপর প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে গভর্নর বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদে শিল্পায়নকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন অর্থনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণের কথা তুলে ধরেন এবং শুধু এককভাবে কৃষি নির্ভরতায় না থেকে কৃষির সাথে সাথে শিল্পের উন্নয়ন একান্তভাবে দরকার সেটা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, শিল্প উন্নয়ন করতে পারলেই আমাদের কর্মসংস্থান ও রফতানি বাড়বে। দেশের মানুষের অভ্যন্তরীণ চাহিদার সঙ্গে আর্থ-সামাজিক উন্নতি হবে। সেক্ষেত্রে বেপজা যথেষ্ট অবদান রেখে যাচ্ছে। সেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী আসছে। বিনিয়োগ হচ্ছে এবং বিনিয়োগের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগের বিষয় মাথায় রেখেই বেপজা’র সাথে সাথে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। আমাদের খাদ্য উৎপাদন যেন কোনোভাবেই হ্রাস না পায় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। খাদ্য চাহিদা পৃথিবীতে কখনও কমবে না, এটা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা শিল্পাঞ্চলগুলো বিশেষভাবে করে দিচ্ছি। এতে যেসব জায়গায় শুধু শিল্প হবে। সাথে সাথে পরিবেশ রক্ষার দিকটাও বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যেহেতু জনসংখ্যার অধিকাংশ কর্মক্ষম যুবকশ্রেণি। তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা আরও দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারি। সে লক্ষ্যে পদক্ষেপও নিয়েছি। একেবারে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে আমাদের জনগোষ্ঠীকে বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত উপযুক্ত করে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি। সে ধরনের শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছি।
তিনি বলেন, এই যে আমাদের কর্মক্ষম জনশক্তি, এটাই বিশ্বকে আকর্ষণ করছে আরও বিশেষভাবে আমাদের দেশে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে। বিনিয়োগের সব থেকে একটা আকর্ষণীয় জায়গা এখন বাংলাদেশ। কাজেই আমাদের এ দিকটা বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।
বিনিয়োগ আকর্ষণের কারণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন অনেক চড়াই-উৎরাই পার হয়ে আমরা একটা স্থিতিশীল রাজনীতি বজায় রাখতে পেরেছি এবং সেই সঙ্গে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে বলেই বিনিয়োগের ক্ষেত্রটা আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে মানুষের কাছে। পাশাপাশি আমরা সে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক সুযোগ সুবিধাও দিয়ে দিচ্ছি। বিশেষ করে বেপজায় যারা বিনিয়োগ করে তারা বিশেষ সুবিধাও পেয়ে থাকে এবং এখানে শ্রমিকরাও যথেষ্ট ভালো বেতন পায়, সুযোগ সুবিধা পায়।
এ সময় বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম বীরপ্রতীক, এসপিপি, এনডিসি, পিএসসি সভায় বেপজার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও সাফল্যের দিক তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৮টি ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং রফতানিতে বৈচিত্র্য আনতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করছে।
বিগত ১০ দশ বছরে বেপজার সাফল্য তুলে ধরে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আরও বলেন, জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান দ্বিগুণ করার যে লক্ষ্যমাত্রা রূপকল্প-২০২১’এ স্থির করা হয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য বেপজা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইপিজেড প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০৯ পর্যন্ত মোট উৎপাদনরত শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৭৯টি। বিগত ১০ বছরে (২০০৯-২০১৯) বর্তমানে সরকারের বিনিয়োগবান্ধব নীতির ফলে ইপিজেডে উৎপাদনরত শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৯৬টি থেকে বেড়ে ৪৭৫’এ উন্নীত হয়েছে। এছাড়া আরও ১০৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা এবং সরকারের বিনিয়োগ সহায়ক নীতির ফলে বিশ্ববাজারে ইপিজেডগুলো বিনিয়োগের সুবর্ণভূমি হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। ২০০৯ সালে ইপিজেডে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল মাত্র ১ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার যা বিগত ১০ বছরের তিনগুণের বেশি বেড়ে ৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এ পর্যন্ত ইপিজেডগুলোতে ৩৮টি দেশের উদ্যোক্তা বিনিয়োগ করেছে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/রী

Share
নিউজটি ৫২২ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged