নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী বছরের জুনের আগেই শেয়ারবাজরে নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসবে বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন। এতে বিনিয়োগকারীর অল্টারনেটিভ চয়েজ বেড়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। গতকাল সোমবার বিএসইসি কার্যালয়ে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে কমিশনার হেলাল উদ্দিন নিজামী, স্বপন কুমার বালা, খন্দকার কামালুজ্জামানসহ নির্বাহী পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন বলেন, বাজারে নতুন নতুন প্রোডাক্ট আনার ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে কমিশন। তাতে আগামী বছরের জুনের আগেই শেয়ারবাজরে নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসবে। বাজারে যখন বিনিয়োগকারীর অল্টারনেটিভ চয়েজ বেড়ে যাবে, তখন লসের মাত্রা কমে যাবে। এর ফলে বাজারের গভীরতা বাড়বে। পাশাপাশি বাজার স্থিতিশীলতা হবে। আমরা সেই দিনের প্রতীক্ষা করছি।
তিনি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বরাত দিয়ে বলেন, আমি যখন এখানে বসেছিলাম তখন অর্থমন্ত্রী আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন- বাজার উন্নয়নের জন্য যা যা করতে হয় আমরা সব প্রকার চেষ্টা করবো। আপনি যেহেতু একটি অনুষ্ঠানের মধ্যে আছেন, সবাইকে জানিয়ে দেন। বাজারে ইনডেক্স (সূচক) শুধু পজেটিভ হলে হবে না। বাজারের টার্নওভার (লেনদেন) যেন অনেক বড় হয়, সবার ভেতরে যেন একটা আস্থার সৃষ্টি হয়, আমরা সেই পরিকল্পনা নিয়েছি।
অর্থমন্ত্রীর বরাতে তিনি আরো বলেন- বীমা খাত থেকে সরকারি লাভজনক কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনার ক্ষেত্রে বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। সেই লাভজনক কোম্পানি শিগগির আপনারা দেখতে পাবেন। কয়েক মাসের মধ্যে দু‘একটি প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে আসবে। এছাড়া মোবাইল অপারেটর রবির বিষয়েও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। রবি ও গ্রামীণফোনের যে সমস্যা তার সমাধান হয়ে যাবে। রবি আমাদের সঙ্গে বসেছে। প্রথমে ওরা বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে আসতে চেয়েছিল। আমরা বলেছি, ফেস ভ্যালুতে আসতে। কারণ বাজারে যদি আপনি ফেস ভ্যালুতে না আসেন, তাহলে বিনিয়োগকারী কিছুই পাবে না। কোম্পানিটির ব্যালেন্স সিট এখতো এতো শক্তিশালী নয়। ওরা এতেও রাজি হয়েছে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) যে ভূমিকা রয়েছে, তা নিয়ে আমরা তাদের জবাবদিহির আওতায় আনবো। আইসিবির বন্ডের ২ হাজার কোটি টাকা নিয়ে দেখা গেল বিনিয়োগকারীদের যে টাকা দেয়ার কথা তার ৫০ শতাংশ দিয়েছে, বাকি ৫০ শতাংশ ডিবেঞ্চারে লোন হিসেবে দিয়েছে। ফান্ড জমা হবে, সেই ফান্ড পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট না দিয়ে, অন্য গার্মেন্টস কোম্পানিকে দেবেন- এগুলো করা যাবে না। বিডিবিএলের (বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড) মাধ্যমে কীভাবে বাজারকে সচল রাখা যায়, সে ব্যবস্থা আমরা করবো।
বিনিয়োগ শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান বলেন, টেকনিক্যাল এনালাইসিসের ক্ষেত্রে ভিন্নতা এসেছে। কয়েক বছর আগে আমাদের দেশে যে টেকনিক্যাল এনালাইসিস করা হতো, আপনি আমেরিকাতে যান, দেখবেন ধরণ ও সফটওয়্যারে ভিন্নতা এসেছে। তাই প্রত্যেকটি সময়ে বিনিয়োগ শিক্ষা ছাড়া উপায় নেই।
অনুষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ এবং অনলাইনে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ‘কাস্টমার কমপ্লেইন অ্যাড্রেস মডিউল’ (সিসিএএম) এর উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান