editorial

নিয়ন্ত্রক সংস্থার নমনিয়তায় কোম্পানিগুলোর সময়ক্ষেপন

সময়: রবিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২১ ১২:২৯:৪০ অপরাহ্ণ


শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো কখনোই কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়না। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিনিয়োগকারী এবং শেয়ারবাজারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। অনেক সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থাও কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে ছাড় দিয়ে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে নির্ধারিত শেয়ার ধারণের বিষয়টির কথা বলা যায় ২০১৯ সালের ২১ মে বিএসইসির জারি করা নির্দেশনা পরিপালন। গত ২ বছরেও অনেক কোম্পানিই বিএসইসি’র নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা একাধিকবার সময় বাড়ানোর পরও কোম্পানিগুলো সেভাবে আমলে নিচ্ছেনা। বরং বিএসইসি’র নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা নিজেদের ফায়দা হাসিলের জন্যই বার বার সময়ক্ষেপন করছে ।
জানা যায়, উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য ২৫ কোম্পানিকে এক মাস সময় দিয়ে চিঠি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিগুলো হলো- আজিজ পাইপস, ফু-ওয়াং ফুডস, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালস, সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, ডেল্টা স্পিনার্স, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, অ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, রতনপুর স্টিল রি-লোরিং মিলস (আরএসআরএম), আলহাজ্জ টেক্সটাইল মিলস, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফার্মা এইডস, কাট্টালি টেক্সটাইল, ফু-ওয়াং সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলস, ফ্যামিলিটেক্স বিডি, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ফাইন ফুডস, অগ্নি সিস্টেমস এবং অ্যাডভেন্ট ফার্মা। গত সোমবার (৬ ডিসেম্বর) ২৫ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিষয়টি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। এ চিঠি জারির তারিখ থেকে কোম্পানিগুলোর শেয়ার ধারণের জন্য এক মাস সময় কার্যকর হবে। কোম্পানিগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে বিএসইসি জানিয়েছে, একাধিক বার আলোচনা, বৈঠক ও সতর্কতার পরে এটি এখনও প্রতীয়মান হচ্ছে যে, ২০১৯ সালের ২১ মে বিএসইসির জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী আপনার কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক এখনও সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেননি। চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের মাসিক শেয়ার ধারণ পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ফলে আপনার কোম্পানি ২০১৯ সালের ২১ মে বিএসইসির জারি করা নির্দেশনা পরিপালন করেনি। চিঠিতে আরও বলা হয়, এ পরিস্থিতিতে আপনার কোম্পানিকে আগামী এক মাসের মধ্যে সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ২১ মে বিএসইসির জারি করা নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালন করতে নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায়, ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি।
পরিশেষে বলতে চাই, এরপর যেন কোন অবস্থাতেই আর সময় বাড়ানো না হয়। বাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ব্যর্থ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

Share
নিউজটি ২৯৩ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged