editorial

পিপলস লিজিংকে অবসায়ন নয়, পুর্নগঠন করা হোক

সময়: মঙ্গলবার, জানুয়ারি ৭, ২০২০ ১১:৩৯:১২ পূর্বাহ্ণ


নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘পিপলস্ লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (পিএলএফএসএল) অবসায়নের সিদ্ধান্ত আবারো পেছালো শিরোনামে একটি সংবাদ দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিনের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদটি নানা কারণেই বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। বেশি কিছু দিন ধরেই শুনা যাচ্ছিল পিএলএফএসএল অবসায়িত হতে যাচ্ছে। এই অবস্থায় আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, পিএলএফএসএল’কে অবসায়ন না করে সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের আদলে পুর্নগঠন করা হউক। এখানে জানিয়ে রাখা ভাল সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতায় ফারমার্স ব্যাংককে পুর্নগঠন করে ‘পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড’ নামে পরিচালিত হচ্ছে। তাই এই নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি বিকল্প কোনো পন্থায় চালু রাখা যায় কি-না সেটা বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে। কারণ এখানে হাজারো গ্রাহকের টাকা আমানত রয়েছে। পাশাপাশি শেয়ারবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার রয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার দায়ভার সংশ্লিষ্ট গ্রাহক ও শেয়ারহোল্ডাররা বহন করতে পারেন না। কারণ অবসায়ন হলে আমানতকারীরা আদৌ কোনো টাকা ফেরত পাবে কি-না বা কবে পাবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আর অবসায়িত হলে শেয়ারহোল্ডার কিছুই পাবে না, এটি নিশ্চিত। তাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে সাধারণ মানুষের আস্থায় ফাটল ধরাতে পারে যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। তাই পিএলএফএসএল‘র বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তই গ্রহণ করা হোক, সেটাই প্রত্যাশিত। একটি ব্যাংক বা নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হাজার হাজার মানুষের স্বার্থ জড়িত থাকে। তাই এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে যে কোনো সিদ্ধান্তই গ্রহণ করা হোক না কেনো তা অত্যন্ত ভেবে-চিন্তে নেয়া উচিত। আর একবার যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তা বাস্তবায়নে কোনো কারণেই কালক্ষেপন করা সঙ্গত নয়। কারণ কোনো একটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বিলম্বিত হলে তার উপর মানুষের আস্থা যেমন নষ্ট হয় তেমনি সেই সিদ্ধান্তের সুফলও ঠিক মতো পাওয়া যায় না। এদিকে দায়দেনা নিরূপনের জন্য মাননীয় আদালত ‘একনাবিন’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে নিরীক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখের মধ্যে একনাবিনকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে একনাবিন বাংলাদেশ ব্যাংকের চাহিদাকৃত সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা আরো তিন মাস বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট সময় চেয়ে আবেদন করে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক নিজ উদ্যোগে সময়সীমা বাড়াতে চাচ্ছে না। তারা সময়সীমা বাড়ানোর কোনো দায় নিতে চাচ্ছে না। তাই ইস্যুটি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক আদালতে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেহেতু মাননীয় আদালত নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান একনাবিনকে মনোনয়ন দিয়েছিল তাই বাংলাদেশ ব্যাংক আদালতের উপরই সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিষয়টি ছেড়ে দিতে চাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরো আগে থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন ছিল। তারা যদি বুঝতে পারতেন যে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থা এতটাই খারাপ তাহলে তারা এই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করতেন না। পিপলস্ লিজিংয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়া পর্যন্ত স্টক এক্সেঞ্জগুলোও পিএলএফএসএল’কে তালিকাচ্যুত করতে পারছে না। ফলে তারাও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। পিএলএফএসএল’র বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত এর গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। তাই বিষয়টির যত দ্রুত সুরাহা হবে, ততই ভাল। আমরা কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধের পক্ষে না, গড়ার পক্ষে। তাই সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি ভেবে দেখবেন এমনটাই আশা করছি।

Share
নিউজটি ৩১৭ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged