editorial

বছরে ৪ ধাপে এজিএম করা হোক

সময়: সোমবার, ডিসেম্বর ৬, ২০২১ ২:৩৩:২৫ অপরাহ্ণ


একদিনে একাধিক কোম্পানির এজিএম অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত হতে পারছেন না। এতে বিনিয়োগকারীদের সম্মতি ছাড়াই নিজেদের সুবিধামত এজেন্ডা পাশ করে নিচ্ছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো। যদি সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীরা এতে অংশ গ্রহণ করতে পারে- তাহলে তাদের সাথে সরাসরি দেখা হবে মালিকপক্ষের। তারা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যা কোম্পানির ভিত মজবুত করতে সহায়ক হবে। বিনিয়োগকারীদের অনুপস্থিতির কারণেও কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা থাকছেনা। এতে ক্রমেই তারা সেচ্ছাচারি ওয়ে ওঠে। কোনো আইন-কানুন সঠিকভাবে পালনও করছেনা। প্রকৃত বিনিয়োগকারীদের অনুপস্থিতির কারণে সব কিছুর মধ্যে অস্বচ্ছ্বতা রয়ে যাচ্ছে।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসেই অনুষ্ঠিত হবে ১৭৩টি কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা। এর মধ্যে আগামী ২৩ ডিসেম্বর ৩০টি, ৩০ ডিসেম্বর ২৫টি, ২৭ ডিসেম্বর ১৯টি, ২৬ ডিসেম্বর ১৩টি, ২৮ ডিসেম্বর ১৩টি ২৯ ডিসেম্বর ১১টি, ১৫ ডিসেম্বর ১০টি, ২২ ডিসেম্বর ১০টি, ১৪ ডিসেম্বর ৬টি, ১৯ ডিসেম্বর ৫টি, ২০ ডিসেম্বর ৭টি, ২১ ডিসেম্বর ৪টি, ২৫ ডিসেম্বর ৪টি, ১১ ডিসেম্বর ৩টি, ১২ ডিসেম্বর ৪টি এবং ১৩ ডিসেম্বর ৩টি কোম্পানির এজিএম অনুষ্ঠিত হবে।

এখন ধরা যাক, যেদিন ৩০টি কোম্পানির এজিএম অনুষ্ঠিত হচ্ছে তার মধ্যে একেকজন বিনিয়োগকারীর শেয়ার রয়েছে ১০টি বা সবগুলোর কোম্পানির। এমতাবস্থায় ওই বিনিয়োগকারী কিভাবে এজিএমে তার মতামত জানাবে? কোম্পানিগুলোরও উপায় নেই এজিএম না করার। তাদেরকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এজিএম সম্পন্ন করতে হবে। দিনের পর দিন শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও একদিনে একাধিক কোম্পানির এজিএমে বাঁধাও দিতে পারছেনা। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা চাইলে এর পরিবর্তন করতে পারে।

যেমন- শেয়ারবাজারে কর্পোরেট বন্ড, ডিবেঞ্চার এবং ট্রেজারি বন্ড ছাড়া ৪১৭টি কোম্পানি রয়েছে। এই ৪১৭টি কোম্পানিকে ৪ ভাগে ভাগ করে বছরের ৪ ধাপে এজিএম করার নিয়ম করা যেতে পারে। দেখা যাবে প্রতি ৩ মাস অন্তর ১০০টি বা তারচেয়ে কম বেশি এজিএম করতে পারবে কোম্পানিগুলো। এতে সারা বছরই কোন না কোন কোম্পানির এজিএম অনুষ্ঠিত হবে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক-বীমা-আর্থিক খাত মিলে ১০৭টি কোম্পানির ক্লোজিং ডিসেম্বর করা যেতে পারে। এরপর প্রকৌশল ও বস্ত্র খাত মিলে মোট ১০০টি কোম্পানির ক্লোজিং ৩১ মার্চ করা যেতে পারে। মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ওষুধ ও রসায়ন এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত মিলে ৯৯টি কোম্পানির ক্লোজিং জুন মাসে করা যেতে পারে। আর বাকি ছোট ছোট খাতগুলোর মোট ১১১টি ক্লোজিং সেপ্টেম্বর করা যেতে পারে। এভাবে ক্লোজিং করা হলে কোম্পানিগুলোর মধ্যে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বাড়বে। বিনিয়োগকারীরাও এজিএমে অংশগ্রহণ করে স্বাধীনভাবে মতামত প্রদান করতে পারবে। এতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা হবে বলে মনে করছি।

যেহেতু নিয়ন্ত্রক সংস্থা চাইলে আইন-কানুন পরিবর্তন করতে পারে। তাই আশা করি, বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ভেবে-চিন্তে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এবং শেয়ারবাজারের উন্নয়নে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

 

Share
নিউজটি ৩৭৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged