editorial

২০২১ সালের রূপে ফিরতে শুরু করেছে বাজার

বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে চাই কঠোর মনিটরিং

সময়: মঙ্গলবার, জানুয়ারি ৪, ২০২২ ২:৩৮:২৬ অপরাহ্ণ


২০২১ সালের শুরু থেকে বাজারের যে আচড়ণ দেখা গিয়েছিল- এবারও সেই রূপে ফিরে এসেছে বাজার। ২০২১ সালের বছরের শুরু থেকে বাজারের ধারাবাহিক উত্থানে প্রধান সূচক ইতিহাসের মাইল ফলকে পৌছে। তবে লেনদেনে খুব একটা গতি ছিলনা। এবার যেন বাজারের চিত্র আরো ইতিবাচক হয় সেটাই বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা। যদি ২০২১ সালের শেষের দিকে খুব একটা ভাল আচড়ণ করেনি বাজার। ধারাবাহিক দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যেঅনেকটা আস্থাসঙ্কট বিরাজ করছে। বাজারকে স্বাভাবিক করতে বাজারে মনিটরিং বাড়াতে হবে। কিন্ত বাজারের যে পরিমাণ মনিটরিং দরকার- সেভাবে না হওয়ায় বাজার স্বাভাবিক হচ্ছেনা। বাজার মনিটরিংয়ে অবশ্যই দুর্বলতা রয়েছে। কিন্ত সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সেভাবে মনিটরিং করতে দেখা যায়না। যে কারণে বাজারে স্থিতিশীলতা আসছেনা। মাঝে মাঝে বাজার ঊর্ধ্বমুখী হলেও তার স্থায়িত্ব বেশিদিন থাকছে না।

 

দেখা গেছে, বাজারে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েও আবার হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে আসে। এতে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সঙ্কট তৈরি হয়। বাজারে ধারাবাহিক পতন বা উত্থান কোনোটাই কাম্য নয়। সূচক ও লেনদেনে ওঠানামা থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্ত তা যেন স্বাভাবিক নিয়মে হয়। তাই দীর্ঘদিন ধরেই দেশের শেয়ারবাজারে সে রূপ দেখা যায়না। অনেক সময় দেখা গেছে বাজারে ধারাবাহিক ঊত্থান হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজারের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। তারা নতুনভাবে বিনিয়োগ করে ভালো মুনাফার আশায়। কিন্ত বাজারের উত্থানের ধারা কিছুদিন পরেই পতনে রূপ নেয়। ধারাবাহিকভাবে সূচক ও লেনদেন কমে তলানীতে বা পতনের বৃত্তে অবস্থান করে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজার নিয়ে দারুন শঙ্কা দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে, বাজারে সঠিক মনিটরিংয়ের অভাবে এমন অস্বাভাবিক আচরণ দেখা যায়।

শেয়ারবাজারে একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে কারসাজি করে নিজেদের ফায়দা হাসিলে সব সময় সচেষ্ট রয়েছে। তাদের টার্গেট হচ্ছে অতিশয় দুর্বল, স্বল্পমূলধনী ও ঝুঁকিপুর্ণ কোম্পানিগুলো। এসব কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা তুলনামুলকভাবে কম থাকে। যে কারণে এ ধরণের কোম্পানির বেশিরভাগ শেয়ার ক্রয় করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ইচ্ছে মতো দর ওঠানামা করা যায়। একই সঙ্গে বাজারে গুজব রটিয়ে কোম্পানিগুলোর দর অতিমূল্যায়িত করে থাকে। এরপর বেশি দরে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে উদ্দেশ্য হাসিল করে বেড় হয়ে যায়। এসব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত শেয়ার ক্রয় করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও নিজেদের পুঁজিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। শেয়ারটির দর এক সময় তলানীতে নেমে আসলে নজরবিহিন লোকসানে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সার্বিক বাজার চিত্রে। এসব দুর্বল কোম্পানির দর বৃদ্ধির কারণে বাজারে সূচক বাড়লেও সে হারে লেনদেন বাড়েনা। যে কারণে বাজারকে ঘুরে ফিরে তলানীতে অবস্থান করতে দেখা যায়।

যখন কোনো শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়- তখন ডিএসইর পক্ষ থেকে এক ধরণের দায়সারা তদন্ত নোটিশ পাঠানো হয়। এর প্রেক্ষিতে কোম্পানিগুলোও গতানুগতিক উত্তর দেয়- দর বাড়ার কোন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য তাদের জানা নেই। শুধু কোম্পানিগুলোকে শোকজ না করে সংশ্লিষ্ট বড় অ্যাকাউন্টের বিনিয়োগকারীদেরকেও শোকজের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি বাজারে কারা গুজব ছড়াচ্ছে বা কোন অ্যাকাউন্ট থেকে দুর্বল কোম্পানির শেয়ারে উল্লেখযোগ্য হারে বিনিয়োগ হচ্ছে- সেগুলো পর্যবেক্ষন করতে হবে। সুতরাং, এর সাথে জড়িত ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যাতে করে কেউ বাজার নিয়ে ইচ্ছে মতো খেলতে না পারে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

 

Share
নিউজটি ৭১৬ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged