অর্থবছর ২০১৮-১৯

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ আইসিবি

সময়: রবিবার, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯ ১০:৪৮:৩১ পূর্বাহ্ণ


সোহেল রহমান : গত অর্থবছরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে সম্পাদিত ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’ (এপিএ)-এর প্রায় সব সূচকেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ‘ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ’ (আইসিবি)।
সংস্থার পারফরমেন্স প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ, স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের পরিমাণ বাড়ানো, নতুন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ানো, ইক্যুইটি হিসেবে অর্থ বিতরণ, মার্জিন ঋণ বিতরণ ও আদায় এবং খেলাপি ঋণ আদায়ে আইসিবি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। তবে প্রকল্প ঋণ বিতরণ ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড সার্টিফিকেট বিক্রির ক্ষেত্রে সংস্থাটির অর্জন লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অধিক। এ প্রেক্ষিতে যেসব সূচকে সংস্থাটির অর্জন সন্তোষজনক নয়, সেসব ক্ষেত্রে আগামীতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে আইসিবি-কে নির্দেশ দিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

আইসিবি’র মতে, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে মুদ্রাবাজার থেকে পরিবর্তনশীল সুদহারে সংগৃহীত তহবিলের ওপর নির্ভরশীলতা এবং পর্যাপ্ত তহবিল প্রাপ্তির সীমাবদ্ধতা; স্বল্পমেয়াদে তহবিল সংগ্রহ করে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের ফলে সংস্থার তহবিল ব্যয় ও সুদ ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং বিপুল পরিমাণ মার্জিন ঋণ অনাদায়ী থাকা সংস্থাটির প্রধান সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পুঁজিবাজারে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ছিল আইসিবি’র। এর বিপরীতে গত অর্থবছরে সংস্থাটি বিনিয়োগ করেছে ২ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। এছাড়া দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে গত জুন শেষে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, নতুন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ানো, ইস্যু ম্যানেজমেন্ট ও আন্ডার-রাইটিং-এর লক্ষ্যমাত্রা ছিল যথাক্রমে ২ হাজার ৫০০ জন, ১০টি ও ৮টি। এর বিপরীতে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৩৯৪ জন এবং ইস্যু ম্যানেজমেন্ট ও আন্ডার-রাইটিং-এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৬টি ও ৫টি। অন্যদিকে মিউচ্যুয়াল ফান্ড সার্টিফিকেট বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে বিক্রয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯২ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত অর্থবছরে আইসিবি’র মার্জিন ঋণ বিতরণ ও ইক্যুইটি হিসেবে অর্থ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা এবং ৯০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে দেয়া হয়েছে যথাক্রমে ৫৭৯ কোটি টাকা এবং ২৭ কোটি টাকা। এছাড়া ৩৫০ কোটি টাকা প্রকল্প ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিতরণ করা হয়েছে ৬৪৬ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, বিভিন্ন খাতে ঋণ আদায়ের মধ্যে বকেয়া মার্জিন ঋণ খাতে ১ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩২৬ কোটি টাকা; ৯৫ কোটি টাকা প্রকল্প ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮৬ কোটি টাকা এবং ইক্যুইটি হিসেবে বিতরণকৃত অর্থ থেকে ৪৫ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২৯ কোটি টাকা আদায় করেছে আইসিবি।

এছাড়া, সংস্থার খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৯১ কোটি টাকা। আর অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ১ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৫ লাখ টাকা। #

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ২৯৮ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged