বিকল্প বিনিয়োগে সব ধরনের ফি কমানোর উদ্যোগ

সময়: সোমবার, আগস্ট ৫, ২০১৯ ৭:৫৯:০১ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক :বিকল্প বিনিয়োগ তহবিল ব্যবস্থাপকদের সব ধরনের ফি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে বিকল্প বিনিয়োগ আরো উৎসাহিত হবে এবং এর মাধ্যমে ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান বিকল্প বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে।

বর্তমানে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগ শুরুর আগেই ২ শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয়। আবার বিকল্প বিনিয়োগ তহবিল ব্যবস্থাপকদের ৩৫ শতাংশ কর দিতে হয়। এতে ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। তাই ব্যবসা সহজ করার লক্ষ্যে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে যে বাৎসরিক ফি, আবেদন ফি ও নিবন্ধন ফি দিতে হয়, তা সহনীয় মাত্রায় নির্ধারণ করার সুপারিশ করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিকল্প বিনিয়োগ তহবিল বাংলাদেশে অনেকটা আড়ালেই আছে। এভাবে বিনিয়োগের বিষয়টা জনপ্রিয় ও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী করতে তাদের কিছু বিষয়ে ছাড় দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যাতে আর্থিক খাতসহ পুঁজিবাজারে একটা ইতিবাচক ধারা তৈরি হয়। তবে বিষয়টা এখনো আলোচনার পর্যায়েই রয়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে বলা হয়েছে, তহবিল ও তহবিল ব্যবস্থাপকের উপর আরোপিত কর ও স্ট্যাম্প ডিউটিতে অসামঞ্জস্যতা রয়েছে এবং তা ভেঞ্চার ক্যাপিটালের জন্য সহায়ক নয়। আপাতত কর ও ডিউটিমুক্ত সুবিধা দেয়া হলে অদূর ভবিষ্যতে সরকারের আয় বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।

একই সূত্রে জানা গেছে, এনবিআর থেকে বলা হয়েছে, এ ধরণের উদ্যোগকে উৎসাহিত করার জন্য আইপিও-তে বিকল্প বিনিয়োগের জন্য কোটা নির্ধারণ করার বিষয়টি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন পর্যালোচনা করে দেখতে পারে।

এ প্রসঙ্গে ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (ভিসিপিএবি)-এর চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন, ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সরাসরি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং প্রায়ই ক্ষুদ্র ও নতুন কোম্পানির একমাত্র অর্থনৈতিক উৎস হিসেবে কাজ করে। তাই বিকল্প বিনিয়োগ তহবিল ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ও উচ্চসম্পদধারী ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের কর মওকুফ ও প্রভিডেন্ড ফান্ড বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর ছাড়ের নীতি সহায়তা পেলে এ খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে পারে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানিগুলো যথাযথ নীতি সহায়তা পেলে স্টার্টআপ খাতে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারবে। এতে ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে।’

তার মতে, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ছাড়া আমাদের উচ্চ আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীত হওয়া অধরাই থেকে যাবে। আর যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হচ্ছে। যদিও ব্যবসা সহজীকরণ ও আমাদের নিজস্ব স্থানীয় অংশগ্রহণ বিষয়ে তাদের দুঃশ্চিন্তা রয়ে গেছে।

বিকল্প বিনিয়োগের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এখানে কোনো পূর্ব নির্ধারিত লাভ (সুদ) থাকে না। তহবিল ব্যবস্থাপনা কোম্পানি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে একই রকম ঝুঁকি বহন করে থাকে। বিশে^র সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলো (গুগল, ফেসবুক, অ্যামাজন ইত্যাদি) ভেঞ্চার তহবিলের অর্থায়নে গড়ে উঠেছে এবং বিনিয়োগের শতগুণ বা তারও বেশি মূল্য সংযোজন করেছে। বাংলাদেশে কর সুবিধা না থাকায় এ শিল্পটি বিকাশ লাভ করতে পারছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৫১ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged