শেয়ার বেচাকেনার মাধ্যমে অর্জিত আয় করমুক্তই থাকছে : বিএসইসি

সময়: বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ ১০:৪৩:০২ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যক্তিপর্যায়ে শেয়ার বেচাকেনার মাধ্যমে অর্জিত আয় করমুক্তই থাকছে। ওইটা ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রজোয্য। এনবিআরের সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম। বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, এনবিআর এর ধোঁয়াশার কারণে বাজারের বেশ ক্ষতি হয়েছে। আজকে বাজার অনেকখানি পড়েছে। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিষয়টি ঠিক নয়।

জানা যায়, শেয়ারবাজারে সিকিউরিটিজ কেনা-বেচার উপর ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের অর্জিত মূলধনি আয় করমুক্ত ছিল, কিন্তু এখন থেকে করারোপ করা হবে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে শেয়ারবাজারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আগামী অর্থবছরের জন্য প্রকাশিত আয়কর পরিপত্র নিয়ে এমন বিভ্রান্তি তৈরি হয়। তবে বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট কার্যক্রমের মাধ্যমে আয়করের ক্ষেত্রে আনা পরিবর্তন সম্পর্কিত স্পষ্টীকরণে ‘আয়কর পরিপত্র ২০২২-২০২৩’ প্রকাশ করে এনবিআর।

এই আয়কর পরিপত্রের আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ধারা ৩২ সংশোধনী এনে বলা হয়, ১২.২ সরকারি সিকিউরিটিজ এবং পাবলিক কোম্পানির স্টকস্ ও শেয়ার হস্তান্তর হতে অর্জিত মূলধনি আয় করযোগ্য।

ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘বিদ্যমান সেকশন ৩২-এর সাব-সেকশন (৭) অনুযায়ী, সরকারি সিকিউরিটিজ এবং স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত পাবলিক কোম্পানির স্টকস ও শেয়ার হস্তান্তর হতে অর্জিত মূলধনি আয় সেকশন ৩১-এর আওতায় করারোপিত হয় না।

অর্থ আইন, ২০২২-এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর সেকশন ৩২-এর সাব-সেকশন (৭) বিলোপের ফলে সরকারি সিকিউরিটিজ এবং স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত পাবলিক কোম্পানির স্টকস ও শেয়ার হস্তান্তর হতে অর্জিত মূলধনি আয় করযোগ্য আয় হিসেবে পরিগণিত হবে এবং প্রযোজ্য হারে করারোপিত হবে।’

বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। অনেকেই মনে করতে শুরু করেন, তালিকাভুক্ত যেকোনো স্টক বা শেয়ারের বেচাকেনা থেকে আয়ের ওপর করারোপ করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের আয়কর প্রজ্ঞাপন অর্থাৎ এসআরও নং ১৯৬-আইন/আয়কর/২০১৫ অনুযায়ী, ‘ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, বিমা, লিজিং কোম্পানি, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, স্টক ডিলার বা স্টক ব্রোকার কোম্পানির স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার বা শেয়ারহোল্ডার ডিরেক্টরদের সিকিউরিটিজ লেনদেন হতে অর্জিত আয়ের ওপর ৫ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে।

তবে ওই এআরওর (খ) দফা অনুযায়ী, ‘দফা (ক) এবং উক্ত অর্ডিন্যান্সের সেকশন ৫৪এম-এ বর্ণিত করদাতা ব্যতীত অন্য করদাতাদের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তি কোম্পানির সিকিউরিটিজ লেনদেন হতে অর্জিত আয়ের ওপর প্রদেয় আয়কর হতে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। অর্থাৎ ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনাবেচা থেকে অর্জিত আয় করের বাইরে থাকবে।

বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম এই বিষয়ে বলেন, ‘সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ারের ক্যাপিটাল গেইন এখনও করমুক্ত আছে। কারণ ২০১৫ সালের এসআরওতে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের যে কর সুবিধা দেয়া হয়েছিল তা বাতিল করা হয়নি।’

এনবিআরের কর নীতির দ্বিতীয় সচিব বাপন চন্দ্র দাস এ বিষয়ে বলেন, যে কোনো তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজ থেকে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইনের উপর আগে থেকেই কর মুক্ত আছে। নতুন করে কোন কর আরোপ করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, তালিকাভুক্তstate-owned enterprise (SOE) শেয়ার এবং সরকারী সিকিউরিটিজ থেকে শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইনের উপর কর আরোপ করা হবে। যা তারা বেসরকারী কোম্পানি থেকে তাদের মূলধন লাভের বিপরীতে পরিশোধ করছে।

Share
নিউজটি ১৮৩ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged