সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলসের চূড়ান্ত অনুমোদন

সময়: বুধবার, জুলাই ১৭, ২০১৯ ৬:০৪:২১ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা বাড়িয়ে পাবলিক ইস্যু রুল্্স, ২০১৫ সংশোধন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এতে বুক বিল্ডিংয়ে পদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কোটা ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা ৩০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে। আর ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কোটা ৪০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা ৪০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার কমিশনের ৬৯৩তম সভায় পাবলিক ইস্যু রুল্্স সংশোধন করে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।
‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন’ (পাবলিক ইস্যু) রুল্্স, ২০১৫ সংশোধনের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। দাখিল করা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রস্তুতকৃত খসড়ার ওপর প্রাপ্ত জনমত জরিপের মতামত বা পরামর্শ পর্যালোচনা করা হয়েছে। পর্যালোচনার পর রুলসটির সংশোধনী প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদিত হয়।
পাবলিক ইস্যু রুল্্সে যেসব বিষয় সংশোধন আনা হয়েছে
আইপিওতে যোগ্য বিনিয়োগকারী (ইলিজিবল ইনভেস্টর) হিসেবে কোটা সুবিধা গ্রহণ করতে হলে কমিশন কর্তৃক নির্দিষ্ট অংকের বিনিয়োগ থাকতে হবে সেকেন্ডারি মার্কেটে। এ বিনিয়োগ না থাকলে কোনো যোগ্য বিনিয়োগকারী তাদের জন্য সংরক্ষিত শেয়ারের কোটা সুবিধা পাবেন না। সেকেন্ডারি মার্কেটে এ বিনিয়োগের পরিমাণ কত হবে তা কমিশন প্রত্যেক পাবলিক ইস্যুর সম্মতিপত্রে উল্লেখ করবে।
ইস্যুকৃত মূলধনের ৮০ শতাংশ ব্যবহার না করে পাবলিক ইস্যুর প্রস্তাব করা যাবে না।
স্থির মূল্যের পাবলিক ইস্যুর পরিমাণ কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা অথবা ইস্যুয়ারের পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ, যা বেশি সে পরিমাণ হতে হবে। তবে ইস্যু পরবর্তী মূলধন কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা হতে হবে।
স্থির মূল্য পদ্ধিতে পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে ইস্যুয়ার কোম্পানির এক বছরের পজিটিভ নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোর শর্তটি বাতিল করা হলো।
বুকবিল্ডিংয়ে এর মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ কমপক্ষে ৭৫ কোটি টাকা হতে হবে।
বুক বিল্ডিংয়ে এর মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে যোগ্য বিনিয়োগকারীর শেয়ারের কোটা বিডিং এর মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে বিক্রি না হলে সে ইস্যু বাতিল হয়ে যাবে।
স্টক এক্সচেঞ্জকে পাবলিক ইস্যুর তালিকাভুক্তির আবেদন পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে পাবলিক ইস্যু রুলস বা অন্য সিকিউরিটিজ আইন অথবা আর্থিক প্রতিবেদন মানের ব্যত্যয় যদি থাকে, উল্লেখপূর্বক তাদের মতামত কমিশনে প্রেরণ করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে মতামত প্রদান না করলে ধরে নেয়া হবে যে স্টক এক্সচেঞ্জের এ বিষয়ে কোনো মতামত নেই।
বুক বিল্ডিংয়ের মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর বিডিং-এর সময় কোনো তথ্য প্রদর্শন করা যাবে না।
বুক বিল্ডিংয়েয়ের মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর বিডিং এ যোগ্য বিনিয়োগকারীদের তাদের বিডের শতভাগ মূল্য যে এক্সচেঞ্জ বিডিং পরিচালনা করছে তাতে জমা দিতে হবে।
বুক বিল্ডিংয়ের মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর বিডিং এ বিডাররা যে মূল্যে এবং যে পরিমাণ শেয়ার বিড করবেন সেই মূল্যেই সেই পরিমাণ শেয়ার ক্রয় করতে হবে।
বুক বিল্ডিংয়ের মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর বিডিং এ শেয়ারের অ্যালটমেন্ট সর্বোচ্চ মূল্যস্তরে শুরু হবে এবং ক্রমান্বয়ে তা নিচের দিকে আসবে। যে মূল্যে শেয়ার শেষ হবে তা কাট অফ প্রাইস হিসাবে গণ্য হবে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সেই মূল্য থেকে ১০ শতাংশ কমে শেয়ার ক্রয় করবেন।
বুক বিল্ডিংয়ে এর মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর বিডিং এ যদি কাট অফ প্রাইসে একাধিক বিডারের বিড থাকে সেক্ষেত্রে যে বিডার আগে বিড দাখিল করেছেন তাকে প্রথমে শেয়ার প্রদান করা হবে।
বিডিং এর চূড়ান্ত ফল, মূল্য ও বরাদ্দকৃত শেয়ারের সংখ্যাসহ যারা শেয়ার পেয়েছেন তাদের ই-মেইলের মাধ্যমে প্রেরণ করা হবে এবং একই সঙ্গে ইস্যুয়ার, ইস্যু ম্যানেজার এবং এক্সচেঞ্জের ওয়েব সাইটে তা প্রকাশ করা হবে।
অকৃতকার্য বিডারের টাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সর্বোচ্চ পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে বিডারকে ফেরত দিবে।
কৃতকার্য বিডারের টাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সর্বোচ্চ পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ইস্যুয়ারের ব্যাংক হিসাবে জমা প্রদান করবে।
বিডিং-এর পর খসড়া প্রসপেক্টাস এবং সব কাগজপত্র প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে কমিশন সাধারণ জনগণের কাছে শেয়ার বিক্রির অনুমোদন প্রদান করবে।
স্থির মূল্যে পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে যোগ্য বিনিয়োগকারীর কোটা ৪০ শতাংশ থেকে কমে ৩০ শতাংশ হবে এবং সাধারণ জনগণের কোটা (এনআরবি ব্যতিত) ৪০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫০ শতাংশ হবে।
অভিহিত মূল্যের পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে আবেদন সম্মিলিতভাবে ৬৫ শতাংশ এর কম হলে ইস্যু বাতিল হয়ে যাবে এবং আবেদন সম্মিলিতভাবে ৬৫ শতাংশ অথবা তার বেশি হলে কিন্তু শতভাগের কম হলে বাকি শেয়ার আন্ডাররাইটার গ্রহণ করবে।
বুক বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে যোগ্য বিনিয়োগকারীর কোটা ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ এবং সাধারণ জনগণের কোটা ৩০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ হবে।
কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের সাধারণ শেয়ারের উপর লক-ইন এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরু দিন থেকে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক এবং ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি শেয়ারহোল্ডারদের ওপর লক-ইন তিন বছর হবে। আর কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক এবং ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি শেয়ারহোল্ডারদের হস্তান্তরকৃত শেয়ারের ওপর লক-ইন তিন বছর হবে। চার বছর বা তার আগে শেয়ার বন্টনের মাধ্যমে প্রাপ্ত শেয়ারের ওপর লক-ইন এক বছর হবে। অলটারনেটিভ ফান্ড কর্তৃক ধারণকৃত শেয়ারের ওপর লক-ইন এক বছর হবে। এছাড়া অন্যান্য শেয়ারের (প্লেসমেন্ট) ক্ষেত্রে শেয়ারের লক-ইন দুই বছর হবে।
পাবলিক ইস্যুর আবেদনের সময় ইস্যুয়ারকে পূর্বে নগদে উত্তোলিত মূলধনের ক্ষেত্রে ব্যাংকের অথবা অডিটরের সার্টিফিকেট এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট দাখিল করতে হবে।
পাবলিক ইস্যুর আবেদনের সময়ে ইস্যুয়ারকে পূর্বে নগদে ব্যতিত উত্তোলিত মূলধনের ক্ষেত্রে যৌথ মূলধনী কোম্পানির রেজিস্টারের সত্যায়িত বিক্রয় চুক্তি এবং সম্পদের মালিকানা সংক্রান্ত শর্ত দলিল কমিশনে জমা দিতে হবে।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩১৬ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged