নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মো: রকিবুর রহমান পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নব গঠিত কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তার মতে, অভিজ্ঞ এবং ক্যারিয়ার সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে বর্তমানে শক্তিশালী কমিশন গঠিত হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ে উঠবে, যে পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং আইনের কঠোর প্রয়োগ থাকবে। এখানে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা হবে বলে তিনি আশা প্রত্যাশ করেন। তিনি তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন কমিশনের কাছে পুঁজিবাজার উন্নয়নে বেশ কিছু সুপারিশ করেছেন।
রকিবুর রহমান তার সুপারিশমালায় বলেছেন, গত দশ বছরে আমরা যদি দেখি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-BSEC এর যে মারাত্মক ভুল ছিল সেটা হল কমিশন ইনডেক্স নিয়ন্ত্রণ করেছে। শেয়ার বেচা-কেনাতে হস্তক্ষেপ করেছে, শেয়ার ট্রেডিং এ হস্তক্ষেপ করেছেন। যখন বাজারে শেয়ারের দাম কমে যায় এবং ট্রানজেকশন ভলিউম কমে যায় তখন চেষ্টা করেছে ট্রানজেকশন ভলিউম বাড়ানোর জন্য। আবার যখন শেয়ারের দাম অতিরিক্ত বেড়ে যায় তখন চেষ্টা করেছে সেটাকে স্বাভাবিক করার জন্য। অর্থাৎ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ এর দায়িত্ব ছিল বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করা। এটাই ছিল আমাদের জন্য সব চেয়ে দুর্ভাগ্য। পৃথিবীর কোন দেশেই যেমন আমরা যদি ভারতের দিকে তাকাই তাহলে আমরা দেখি (সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া) কখনোই বাজারের শেয়ারের দাম বাড়ল নাকি কমলো, ইন্ডেক্স কমলো নাকি বাড়লো এর সাথে কোন সম্পর্ক নেই। SEBI এর কাজ হল বাজারের সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, রুলস এন্ড রেগুলেশনের কঠোর প্রয়োগ করা, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা, আইনের কঠোর প্রয়োগ করা, ম্যানিপুলেটর এবং সার্কুলার ট্রেডের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা, সে যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন। অপরপক্ষে SEBI যে কাজটা করে সেটা হল facilitate করা যেমন আইপিও আসার ক্ষেত্রে একটি Disclosure Based রুলস তৈরি করে দেওয়া যাতে করে যে সকল কোম্পানির শেয়ার মার্কেটে আসবে তাদেরকে অবশ্যই সঠিক তথ্য দিয়ে, এক্সচেঞ্জের স্ট্রং ভেরিফিকেশন এন্ড রিকমেন্ডেশন এর মাধ্যমে বাজারে নিয়ে আসে। Financial Reporting Council-FRC এর মাধ্যমে আইপিওতে আসা প্রত্যেক কোম্পানির অডিট এবং প্রস্পেক্টাস এর সত্যতা যাচাই বাছাই করে তাদের রিকমেন্ডেশন নেওয়া। যদি কেউ প্রমাণিত হয় মিথ্যা তথ্য দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া। যাতে বাজারে মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ড মার্কেট, অকশন মার্কেট, ডেরিভেটি, সরকারি ট্রেজারী বন্ড দারা বিভিন্ন ভাবে সমৃদ্ধ হতে পারে তার ব্যবস্থা করে দেয়া। বিভিন্ন লিস্টেড কোম্পানিতে কর্পোরেট কালচার এবং গুড গভর্নেন্স যাতে কার্য কার্যকর হয় সেটাকে এনসিওর করা। বিভিন্ন লিস্টেড কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য যে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেকটর নিয়োগ দেয়া হয় সে ব্যাপারে স্ট্রং নজর রাখা। তারা যাতে পরিচালনা পরিষদ, স্পনসর ডিরেক্টর, ম্যানেজমেন্ট দ্বারা প্রভাবিত না হয়। যেহেতু ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টররা সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের পক্ষে কাজ করবে এবং স্বার্থ সংরক্ষণ করবে কাজেই সকল ডিরেক্টরদের হতে হবে অনেক বেশি অভিজ্ঞ এবং Honest। অথচ বাংলাদেশের এর ব্যতিক্রম, কোম্পানির পরিচালকরা নিয়োগ দিয়ে থাকেন কেউ কারও বন্ধু কেউ কারো সাবেক কর্মচারী কেউ কারো আত্মীয় তারা যেখানে সাধারন নিজেদের ইচ্ছে মত ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর নিয়োগ দিয়ে থাকে কেউ কারও বন্ধ, কেউ সাবেক কর্মচারী, কেউবা কারও আত্মীয় , যারা শেয়ারহোল্ডারদের পক্ষে কোন কাজই করেনা। আমাদের দুর্ভাগ্য শুধুমাত্র মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি এবং কয়েকটি লোকাল কোম্পানি ছাড়া কোন লিস্টেড কোম্পানিতে কোন কর্পোরেট কালচার নেই, গুড গভর্নেন্স নেই একাউন্টং এর কোনো সচ্ছতা নেই, সাধারণ শেয়ার হোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই। আমরা যদি দেখি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা তাহলে দেখব সেখানে মালিক পরিচালক যারা আছেন তারা তাদের ইচ্ছামতো নিজেদের অ্যাপয়েন্টেড ঊর্ধ্বতন ম্যানেজমেন্টের সাথে একত্রিত হয়ে নিজেদের স্বার্থে সব কিছু করে থাকেন। যার ফলশ্রুতিতে আমরা দেখতে পাই এক ব্যাংকের পরিচালক আরেক ব্যাংকের পরিচালকের যোগসাজশে নামে-বেনামে, আত্মীয়স্বজনের নামে, নিজস্ব কোম্পানির অধীনস্থ কর্মচারী নামে এক লক্ষ সত্তর হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। সব সময় এই সকল তথাকথিত পরিচালকরা পুঁজিবাজারকে ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীকে ঠকিয়ে সময় এবং সুযোগ বুঝে ভালো বাজারে নিজেদের শেয়ার বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন। অপরদিকে বিনিয়োগকারী এবং শেয়ার হোল্ডাররা বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
নতুন কমিশনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হবে লিস্টেড কোম্পানিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। বিশেষ করে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং শক্তিশালী ম্যানেজমেন্ট টিম গঠন করা যারা শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে যারা সম্পুর্ন সাধীনভাবে কাজ করবে এবং স্পনসর ডিরেক্টরদের প্রভাব মুক্ত থাকবে। আমি দৃঢ়াবে বিশ্বাস করি নতুন কমিশন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এই কাজটি সম্পন্ন হবে। যদিও কাজটি খুব চ্যালেঞ্জিং তবুও আমি তাদের সফলতা কামনা করছি।
বাজারকে গতিশীল করার জন্য ভালো ভালো টেকসই কোম্পানির নিয়ে আসতে হবে। বন্ড মার্কেট শক্তিশালী করতে হবে শুধুমাত্র ইকুইটি মার্কেট দিয়ে পৃথিবীর কোন মার্কেটে চলে না, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারও চলবে না। ভালো ভালো প্রোডাক্ট নিয়ে আসতে হবে এগুলো নিয়ে আসার ক্ষেত্রে মূল দায়িত্ব হলো মাননীয় অর্থমন্ত্রী এবং বর্তমান সরকারের। যেমন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর চেয়েছেন লং-টার্ম লোন ফর ইনভেস্টমেন্ট আসবে পুঁজিবাজার থেকে সেটা ব্যাংক থেকে নয়। কারণ পৃথিবীর কোনো দেশেই সর্ট টার্মের ডিপোজিট নিয়ে লং-টার্ম ফাইন্যান্স করে না। লং-টার্ম ফাইন্যান্স আসবে পুজিবাজার থেকে, জনগণ থেকে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত দশ বছর আগে থেকেই পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করে long-term ফাইন্যান্স পুঁজিবাজার থেকে নেয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য যাদের উপর এই কাজটি ইমপ্লিমেন্ট করার দায়িত্ব ছিল যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থমন্ত্রনাল্য, শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব যারা ছিলেন সেসকল উর্ধতন কর্মকর্তারা এই কাজটি করেননি। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যার্থতা।
আমাদের ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে টাকা নিতে পছন্দ করেন কারণ সেখানে জবাবদিহিতা নাই। কিন্তু পুঁজিবাজারে তাদেরকে জবাবদিহিতা করতে হয়, প্রতি তিন মাস পর পর তাদেরকে আন-অডিটেড আর্থিক প্রতিবেদন দিতে হয়। দুর্ভাগ্য হলো গত দশ বছরে ব্যাংকগুলো যে লং টার্ম লোন দিয়েছে তাদের অধিকাংশই ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। অতএব যদি পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে হয়, যদি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ কারীদের ফিরিয়ে আনতে হয় তাহলে বিশেষ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে হবে। তাতে করে পুঁজিবাজারে যে আস্থার সংকট আছে তা দূর হবে এবং তারল্য সংকট দূর হবে। প্রথম কারণ হল ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় সবগুলোই পুজিবাজারে লিস্টেড। হাজার হাজার বিনিয়োগকারীরা এই সকল ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে বিনিয়োগ করেছে এবং শেয়ার হোল্ডার। দ্বিতীয় কারণ হল, পুজিবাজারে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মার্কেট ক্যাপিটালের ৩০% হোল্ড করে। যদি ব্যাংক ব্যবস্থা শক্তিশালী না হয়, যদি ব্যাংক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পরে তাহলে এটা পুজিবাজারের জন্য বড় বিপর্যয় নিয়ে আসবে। কারন ব্যাংক এবং পুজিবাজার একটি আরেকটির উপর নির্ভরশীল।
কমিশনকে একটা জিনিস উপলব্ধি করতে হবে তারা অত্যন্ত শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান যাদের হাতে 2CC বলে আইনের একটি ক্ষমতা আছে যেটা বাংলাদেশের আর কোন রেগুলেটর বডিকে দেয়া হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক শুধুমাত্র ব্যাংক,আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং এনবিএফআই গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। অপরদিকে যেহেতু পুজিবাজারের সকল কোম্পানিগুলো লিস্টেড, এসব কোম্পানির হাজার হাজার বিনিয়োগকারী এবং শেয়ার হোল্ডার আছে সেহেতু তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করার দায়িত্ব BSEC এর। যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন কোনো সিদ্ধান্ত যা শেয়ারহোল্ডারদের কে ক্ষতিগ্রস্থ করবে তাহলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বিএসইসি অবশ্যই শেয়ার হোল্ডারদের স্বার্থে ভূমিকা রাখবে।
মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি নিয়ে আসা, মৌল ভিত্তিল দেশীয় কোম্পানি নিয়ে আসা, সরকারের হাতে থাকা ভালো ভালো প্রফিটেবল কোম্পানি নিয়ে আসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব হলো মাননীয় অর্থমন্ত্রী। তিনি কিভাবে, কি পদ্ধতিতে ভালো ভালো ফান্ডামেন্টাল কোম্পানি নিয়ে আসবেন, কি প্রণোদনা দিবেন, কিভাবে উৎসাহিত করবেন এবং কিভাবে বাধ্য করবেন পুঁজিবাজারে আনার জন্য সেই সিদ্ধান্ত তিনি নিবেন । যেমন সরকার যদি কঠোর ভাবে বলে দেয় আজ থেকে কোন শিল্পপ্রতিষ্ঠান ব্যাংক থেকে লং-টার্ম লোন নিতে পারবে না শুধুমাত্রকোম্পানি স্টার্টআপ করার জন্য এবং ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জন্য লোন নিতে পারবে তাহলে যারা তাদের কোম্পানিকে বড় করতে চায় বা নতুন করে শুরু করতে চায় তারা অবশ্যই বাধ্য হবে পুঁজিবাজারে আসার জন্য। সে ক্ষেত্রে তাদের উৎসাহিত করার জন্য সরকারকে অবশ্যই অনেক ছাড় দিতে হবে যেমন তাদেরকে কর্পোরেট টেক্সে বড় ধরনের ছাড় দিতে হবে। বর্তমান অবস্থায় এই আর্থিক বিপর্যয়ের কারণে বিভিন্ন লিস্টেড কোম্পানিকে মিনিমাম ৫% কর্পোরেট টেক্স কমিয়ে দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি যেটা ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারাম তিনমাস আগে করেছেন। কোন কোম্পানি শেয়ার বাজারে আসবে কি আসবে না, কোন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি লিস্টেড হবে কি হবে না, সরকার নিয়ন্ত্রিত কোম্পানির শেয়ার বাজারে আসবে কি আসবে না সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে সরকারের সিদ্ধান্তের উপর। পুজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার নিয়ে আসা এবং মার্কেটিং করার দায়িত্ব BSEC এর না।BSEC facilitate করবে যাতে করে ভালো ভালো কোম্পানি, মৌল ভিত্তিক কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে যেন উৎসাহিত হয় যেমন উদাহরণস্বরূপ একটি কোম্পানি লিস্টেড হওয়ার আবেদন জমা দেয়ার সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে BSEC আইন মোতাবেক তাকে অনুমোদন দেয়া বা না দেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়ে দেওয়া। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বিএসইসি যত বেশি শক্তিশালী হয়ে আইনের সঠিক প্রয়োগ করবে, বাজারে সুশাসন কায়েম করবে, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে, ম্যানিপুলেটরদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিবে, সার্কুলার ট্রেড বন্ধ করবে, লিস্টেড কোম্পানির স্পন্সর ডিরেক্টরদের ক্ষমতা খর্ব করবে, ম্যানেজমেন্টকে শক্তিশালী করবে; ইনশাল্লাহ পুজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে এবং বিনিয়োগকারীর আস্থা ফিরে আসবে। আমার বিনীত আবেদন ইন্ডেক্স বাড়লো কি কমলো, ভলিউম বাড়লো কি কমলো এই ব্যাপারে যেন কোনো পদক্ষেপ না নেয় কারণ এটা তাদের দায়িত্ব না। বিএসইসি যখন বিনিয়োগকারীর স্বার্থে রক্ষা করে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে এবং সকলের ক্ষেত্রে যে যত শক্তিশালী হোক না কেন বাজারে কোন অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবে। বিনিয়োগকারীরা কোন শেয়ার কিনলো কি কিনলো না, কোন দামে কিনলো এটা সম্পুর্ণ তার এখতিয়া। তারা শুধু এটাই চায়, শক্তিশালী সিন্ডিকেট দ্বারা সার্কুলার ট্রেডিং এর মাধ্যমে তারা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং লিস্টেড কোম্পানির স্পনসর মালিক, তাদের উর্ধতন কর্মকর্তা দ্বারা তারা যে ম্যানিপুলেশন হয় তাদেরহাতথেকেবিনিয়োগকারীদের রক্ষা করাBSEC এর দায়িত্ব।
আমাদের দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের জিডিপিতে পুজিবাজারের অবদান মাত্র ১৪-১৫%, যেখানে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে হলো প্রায় ৬০-৭০%। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে এটা হল ১০০-১৫০%। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি নতুন কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্ব ইনশাল্লাহ আগামী চার বছরে পুজিবাজার জিডিপিতে অন্তত ৪০-৫০% অবদান রাখবে। এই দৃঢ়তা নিয়ে আমাদের এগোতে হবে।
আমার বিনীত অনুরোধ মাননীয় বিএসইসি এর সদস্যবৃন্দ যেন কোন সময় এ কথা না বলেন এখন শেয়ার কেনার ভালো সুযোগ এবং এটাও যাতে না বলেন তারল্য সংকট দূর হবে, বাজারে ভালো ভালো শেয়ারের যোগান শুরু হবে, তাহলে কমিশনের এসববক্তব্য প্রভাবিত হয়ে যদি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনে তাহলে ক্ষতির দায়িত্ব কমিশনের ঘাড়ে চাপবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বিএসসি যত শক্তিশালী ভূমিকা পালন করবে, বিনিয়োগকারী সুরক্ষা আইন যতো বেশি কার্যকর করবে, বাজারকে যত বেশি BSEC করবে, স্টক এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম যত বেশি শক্তিশালীকরবে, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের যে দুর্বল দিক আছে সেগুলো যত তাড়াতাড়ি সমাধান করবে। সেদিন বেশি দূরে না যেদিন এই বিএসসি এর নতুন বর্তমান চেয়ারম্যান এবং কমিশনের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী পুজিবাজার গড়ে উঠবে যা জাতীয় অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ।
সর্বশেষ যেটা বলতে চাই পুজিবাজার বন্ধ রেখে আমরা যে ভুল কিরেছি, বিশ্ব পুজিবাজার থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে আছি, বিনিয়োগকারীদেরআস্থার বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংক খোলা থাকবে মানে পুজিবাজারও খোলা থাকবে। তাই আমি বিনীত অনুরোধ করছি একদিনও সময় নষ্ট না করে আপনারা পুজিবাজার খুলে দিন। এটাই হবে ইনশাআল্লাহ নতুন কমিশনের প্রথম এবং সঠিক সিদ্ধান্ত। আমি আপনাদের সফলতা কামনা করছি।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান