নিজস্ব প্রতিবেদক : গত ১০ বছরে ব্যাংক ব্যবসায় লাভের পরিমাণ বহুগুণ কমেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ জনগণ। কিন্তু লাভবান হয়েছেন ব্যাংক মালিকরা। এক ব্যাংক মালিক অন্য ব্যাংক থেকে এবং ওই ব্যাংক মালিক অপর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সুবিধা ভোগ করেন। কিন্তু কাউকেই সেটা পরিশোধ করতে হয় না। সুতরাং নিজেদের স্বার্থেই ব্যাংক মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন অনেকে। জনগণের উপকারের জন্য নয়।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামে আয়োজিত বৃহৎ অর্থনীতি ও এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বিষয়ক কর্মশালায় এসব কথা বলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার, গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।
দেশের অর্থনীতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় ড. মনসুর বলেন, সম্প্রতি জাতীয় সংসদে পরিচালকদের ঋণ ভাগাভাগির যে তথ্য উঠে এসেছে আমার মনে হয় এর বাস্তব চিত্র দ্বিগুণ। অন্যদিকে ব্যাংকিং খাতের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯ শতাংশ বলা হলেও প্রকৃত খেলাপি ২৩ শতাংশ। যা অংকের বিবেচনায় ৪ লাখ কোটি টাকার উপরে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে পিআরআই নির্বাহী পরিচালক বলেন, সম্প্রতি ব্যাংক ঋণের সুদহার কমানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা মোটেও যৌক্তিক নয়। এটি বাস্তবায়নের কিছুদিনের মধ্যেই অর্থনীতিতে ভয়াবহ চিত্র দেখা যাবে। ক্ষুদ্র শিল্প খাত পরিত্যক্ত হয়ে পড়বে। কারণ এই ঋণের পরিচালন ব্যয় বেশি। তখন ইচ্ছা করেই ব্যাংকগুলো এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ করবে না। একদিকে খেলাপি, মূল্যস্ফীতি অন্যদিকে আমদানি-রপ্তানির অবনমন অর্থনীতিকে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি আরো জানান, এই বছরে ব্যাংক খাত থেকে সরকার যে ঋণ নিবে তার পরিমাণ গত ৪৮ বছরের সমান। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে সরকার পরিশোধ করবে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু ১ এপ্রিল থেকে ব্যাংকগুলোকে ৯ শতাংশে ঋণ বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং ব্যাংকগুলোর সুযোগ পেলেই সরকারকে ঋণ দেবে বেসরকারি খাতে নয়। অর্থনীতিতে চাঙ্গা করতে যে সমস্ত নীতিমালা নেওয়া হচ্ছে এর সবগুলোই ভারসাম্যহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান