ডিএসই এমডি’র পদত্যাগের ব্যাখ্যা চায় বিএসইসি

সময়: বৃহস্পতিবার, আগস্ট ২৫, ২০২২ ৬:৩৬:২২ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক আমিন ভূঁইয়া মাত্র ১৩ মাসের মাথায় পদত্যাগ করেছেন। এই বিষয়ে ডিএসই কর্তৃপক্ষের কাছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম বুধবার (২৪ আগস্ট) ডিএসইর চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুসুর রহমানকে এই বিষয়ে আলোচনার জন্য ডেকেছেন। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিএসইসি একটি সূত্র জানিয়েছে, তারেক আমিনের পদত্যাগের বিষয়ে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ডিএসইকে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে বিএসইসি।

গত মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ডিএসই’র এমডি তারিক আমিন ভূইয়া এক্সচেঞ্জটির চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগপত্রে অক্টোবরের শেষে তার পদত্যাগ কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।

আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে গত সোমবার (২২ আগস্ট) পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়াই নিজের ইচ্ছেমতো ১২৭ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেন এমডি। এরমধ্যে ছয় (৩ জন জিএম ও ৩ জন এজিএম) কর্মকর্তাকে আইনের বাইরে গিয়ে পদোন্নতি দেন। আর তাতে পরিচালনা পর্ষদ তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পর্ষদের চাপে পড়ে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

জানা যায়, ডি-মিউচুয়ালাইজেশন (স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা আলাদাকরণ) আইন অনুসারে, জনবল কাঠামোতে স্টক এক্সচেঞ্জে সিনিয়র কোনো পদ নেই। নতুন পদ সৃষ্টি করতে হলে প্রথমে বোর্ডের অনুমোদন লাগবে। পরে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এই ধরনের কোনো অনুমোদন নেয়নি।

অন্যদিকে ডিএসইর নিয়ম অনুসারে ডিজিএম পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে এনআরসির সুপারিশ লাগে। কমিটি যাচাই বাছাই করে পদোন্নতির সুপারিশ করে। কিন্তু কাউকে তোয়াক্কা না করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক একক ইচ্ছায় এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এছাড়া, ডিএসইতে ডাটা সেন্টার গড়ে তুলতে কাজ করছিলেন এমডি। এই সেন্টার গড়ে তুলতে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ ও শেয়ারহোল্ডারদের একটি গ্রুপের পরিকল্পনা ছিল ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করার। কিন্তু তারিক আমিন ভূঁইয়া সেই প্রকল্পটি মাত্র ৪০ কোটি টাকা সমাপ্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সেই অনুসারে কাজও করছিলেন। ফলে পর্ষদ ও শেয়ারহোল্ডারদের গ্রুপটি তার ওপর চাপ সৃষ্টি করছিল।

প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞ তারিক আমিন ভূঁইয়া গত বছরের ২৫ জুলাই ডিএসইর এমডি হিসেবে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১৩ মাসের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন তিনি। যদিও তিন বছরের জন্য ডিএসইর এমডি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এই বিষয়ে ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, এমডি মঙ্গলবার একটি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এতে তিনি অক্টোবরের শেষে পদত্যাগের কথা বলেছেন।

এমডি কেন পদত্যাগ করলেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, উনি ১ পৃষ্টার পদত্যাগপত্রে অনেকগুলো কারণ উল্লেখ করেছেন। এরমধ্যে সংক্ষেপে বলতে গেলে তিনি এখানে যেভাবে কাজ করতে চাচ্ছেন, সেইভাবে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। এই কারণে তিনি পদত্যাগ করা উচিত বলে মনে করেছেন।

ডিএসইর কর্মকর্তাদের যে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে, এখন তার কি হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ডিএসইর নিয়ম অনুযায়ী পদোন্নতির একটি অংশ ওনার (এমডি) এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না, সেটা পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। আর বাকিগুলোর মধ্যে অর্গানোগ্রামে পদ নেই, তবু পদোন্নতি হয়েছে, এগুলো এনালাইসিস করতে হবে।

Share
নিউজটি ২২২ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged