নিরীক্ষক নিয়োগে এক মাস সময় পেল দুই স্টক এক্সচেঞ্জ

সময়: বুধবার, জানুয়ারি ৫, ২০২২ ১১:৪৬:১৭ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক: কমপ্লায়েন্স অডিটর বা পরিপালন কার্যক্রম নিরীক্ষক নিয়োগ দিতে দুই স্টক এক্সচেঞ্চকে (ডিএসই ও সিএসই) এক মাস সময় দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে তাদের সামগ্রিক কার্যক্রমের ওপর বিশেষ নিরীক্ষা করার জন্য গত রোববার নিরীক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। এ ব্যাপারে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) নির্দেশনা পাঠিয়েছে বিএসইসি। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা আলাদা (ডিমিউচুয়ালাইজেশন) হওয়ার পর তাদের সামগ্রিক কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেই বিশেষ এ নিরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে নিয়োগের আগে নিরীক্ষকের কার্যপরিধি উল্লেখ করে বিএসইসির অনুমোদন নিতে হবে। এ ছাড়া দুই স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্তির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্ট আইন/বিধিবিধান তৈরি করে ১০ জানুয়ারির মধ্যে বিএসইসিতে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জের চলমান কার্যক্রম, আচরণবিধি, নীতিনৈতিকতার চর্চা ইত্যাদি ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখাই হবে বিশেষ নিরীক্ষকের কাজ।

এদিকে ডিমিউচুয়ালাইজেশন স্কিমের ৯.২.৩ ধারায় স্টক এক্সচেঞ্জ দুটির জন্য যেসব বিষয় বা লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল, সেগুলোর কতটা অর্জিত হয়েছে, সে ব্যাপারেও কমিশনে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ডিএসইর ডিমিউচুয়ালাইজেশন স্কিম সম্পর্কে ওই ধারায় বলা হয়েছিল, ২০২০ সালের মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জটির দৈনিক গড় লেনদেন উন্নীত হবে আড়াই হাজার কোটি টাকায়। একই বছরের মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগ বাজার মূলধনের ন্যূনতম ৩০ শতাংশে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে। তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের সংখ্যা দ্বিগুণ করা। সেই সঙ্গে দেশি-বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২০২০ সালের মধ্যে বাজারের মোট বিনিয়োগের ন্যূনতম তিন-চতুর্থাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য ছিল। একইভাবে সিএসইর ডিমিউচুয়ালাইজেশন স্কিমেও প্রতিষ্ঠানটির জন্য কিছু লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ডিএসই ও সিএসই অধিকাংশ লক্ষ্যই পূরণ করতে পারেনি।

এদিকে ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর প্রায় আট বছর অতিবাহিত হলেও কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে এখনো কোনো শেয়ার বিক্রি করতে পারেনি সিএসই। তাই কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে শেয়ার বিক্রির বিষয়ে সংস্থাটির কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট টাইমলাইন বা সময়সীমা জানতে চেয়েছে বিএসইসি। এ ছাড়া সরকারি সিকিউরিটিজ ও নানা ধরনের ঋণ পণ্য লেনদেনের জন্য আলাদা প্ল্যাটফর্ম তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী, দুই স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানাসংক্রান্ত মোট শেয়ার প্রতিষ্ঠান দুটির সদস্যদের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করা হয়। সদস্যদের জন্য ৪০ শতাংশ শেয়ার সংরক্ষিত। বাকি ৬০ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে ২৫ শতাংশ কৌশলগত বিনিয়োগকারী ও ৩৫ শতাংশ শেয়ার সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত। ডিএসই কৌশলগত বিনিয়োগকারীর জন্য নির্ধারিত ২৫ শতাংশ শেয়ার এরই মধ্যে চীনের শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত জোটের কাছে বিক্রি করেছে। এখন ডিএসইর হাতে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির জন্য ৩৫ শতাংশ শেয়ার সংরক্ষিত রয়েছে। আর সিএসইর হাতে ৬০ শতাংশ শেয়ার বিক্রির জন্য পড়ে আছে।

এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর দুই স্টক এক্সচেঞ্জের ৩৫ শতাংশ করে শেয়ারবাজারে আনার বিষয়ে সংস্থা দুটির সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসি। বিএসইসি ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে পথনকশা চেয়েছে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

 

Share
নিউজটি ২৪৪ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged