সলভেন্সি মার্জিন প্রবিধানমালার খসড়া

পৃথক হবে বীমা কোম্পানির সম্পদ ও দায়ের পরিমাণ

সময়: বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯ ৯:৩০:১৭ পূর্বাহ্ণ


অনুপ সর্বজ্ঞ : বিমা কোম্পানিগুলোকে সলভেন্সি মার্জিন (ঝুঁকি গ্রহণ ও দাবি পরিশোধের সক্ষমতা) প্রবিধানমালার তফিসিলে নির্ধারিত আলাদা আলাদা ফরমে সম্পদ মূল্যায়ন ও দায়ের পরিমাণ পৃথকভাবে দেখাতে হবে। শুধু তাই নয়, সম্পদ ও দায়ের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে সলভেন্সি মার্জিন নির্ধারণ করতে হবে সাধারণ ও জীবন উভয় বীমা কোম্পানিকেই। এমন বিধান রেখে সাধারণ ও জীবন বীমা কোম্পানির জন্য পৃথক দু’টি সলভেন্সি মার্জিন প্রবিধানমালার খসড়া তৈরি করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। সম্প্রতি এ নিয়ে খাত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আইডিআরএ একটি বৈঠকও করেছে।
সাধারণ বীমা কোম্পানির সলভেন্সি মার্জিন প্রবিধানমালা, ২০১৯ এর খসড়ায় বলা হয়েছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়া ঝুঁকির বিপরীতে অগ্নি বীমা ব্যবসার ৫০ শতাংশ, বিবিধ বীমা ব্যবসার ৫০ শতাংশ, মেরিন কার্গো ব্যবসার ৫০ শতাংশ এবং মেরিন হাল ব্যবসার পূর্ববর্তী ১২ মাসে গৃহীত বা গৃহীতব্য নিট প্রিমিয়ামের ১০০ শতাংশ সংরক্ষণ করতে হবে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোকে।

প্রবিধানমালায় সাধারণ বীমা কোম্পানির যে বিষয়গুলো অন্যান্য দায় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- মন্দ ও সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে সঞ্চিতি, ঘোষিত বা সুপারিশকৃত লভ্যাংশ এবং পূর্ণ অনাদায়ী লভ্যাংশের বিপরীতে সংরক্ষণ, করের বিপরীতে সঞ্চিতি, বিবিধ পাওনাদারের কাছে বকেয়ার পরিমাণ ও অন্যদের কাছে বকেয়ার পরিমাণ। এছাড়া সঞ্চিত প্রিমিয়াম, ব্যতিক্রমি ক্ষতির জন্য সংরক্ষণ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ, বীমা ব্যবসায়রত বীমা কোম্পানির কাছে বকেয়ার পরিমাণ, বকেয়া নিট দাবি ও কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত যেকোনো দায়ও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে অন্যান্য দায় হিসেবে।
এ প্রসঙ্গে আইডিআরএ’র নির্বাহী পরিচালক খলিল আহমেদ দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিনকে বলেন, সলভেন্সি মার্জিনের মাধ্যমে কোম্পানিগুলোকে তাদের সম্পদ ও দায়ের পরিমাণ আলাদা করে দেখাতে হবে। এতেই বোঝা যাবে কোন কোম্পানি ঝুঁকি গ্রহণ ও দাবি পরিশোধে সক্ষম আর কোনটি সক্ষম নয়। সলভেন্সি মার্জিন অনুযায়ী যদি কোন কোম্পানি অক্ষম হয় তাহলে কর্তৃপক্ষ তাকে মার্জ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

অন্যদিকে জীবন বীমা কোম্পানির সলভেন্সি মার্জিন প্রবিধানমালায় অ্যাকচুরিয়াল রিজার্ভ নির্ধারণ পদ্ধতির বিষয়ে বলা হয়েছে, বিধি অনুযায়ী প্রত্যেক পলিসির জন্য আলাদাভাবে নির্ধারিত মূল্যায়ন পদ্ধতিতে অ্যাকচুরিয়াল রিজার্ভ নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া মূল্যায়ন করতে হবে নিট প্রিমিয়াম পদ্ধতিতে। তবে বোনাস, অফিস খরচ বা অন্যান্য মাসুল উক্ত প্রিমিয়ামের পরিমাণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে না। খসড়ায় বলা হয়েছে, হিসাবকৃত নিট প্রিমিয়াম থেকে অ্যাকচুরিয়াল নীতি ব্যবহার করে বড় ধরনের প্রারম্ভিক খরচ সমন্বয় করা যেতে পারে। পলিসির শর্তানুযায়ী প্রদেয় যেকোনো ধরনের খরচ মূল্যায়ন পদ্ধতিতে বিবেচনা করতে হবে। প্রত্যেক পলিসির দায় মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সকল প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে যুক্তিসঙ্গত অনুমানের ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে। যদি নিয়োজিত অ্যাকচুয়ারি পলিসির অ্যাকচুরিয়াল রিজার্ভ নেতিবাচক দেখতে পান সেক্ষেত্রে তা শূন্য হিসাবে নির্ধারণ করা যাবে। এছাড়া অ্যাকচুয়ারি নিট প্রিমিয়াম মূল্যায়ন পদ্ধতি ছাড়া যদি অন্য কোন পদ্ধতি প্রয়োগ যুক্তিযুক্ত মনে করেন তাহলে তা ব্যবহার করা যাবে। নিয়োজিত অ্যাকচুয়ারিকে তার প্রতিবেদনে ব্যবহৃত পদ্ধতির কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে। নিয়োজিত অ্যাকচুয়ারি দায় মূল্যায়নের পাশাপাশি বীমা কোম্পানির সম্পদের প্রকৃতি ও বর্তমান মূল্য বিবেচনায় নেবেন। এক্ষেত্রে সম্পদের কোনো রকম ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে তার জন্য সঞ্চিতি বা প্রভিশনের ব্যাখ্যা রাখতে হবে।
জীবন বীমা কোম্পানির সলভেন্সি মার্জিন প্রবিধানমালায় ইসলামী ব্যবসার ক্ষেত্রে দু’ধরনের রিজার্ভ সংরক্ষণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো- ঝুঁকির জন্য রিজার্ভ ও বিনিয়োগ রিজার্ভ।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৭১ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged