প্রযুক্তিনির্ভর পুঁজিবাজার করতে পারলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে : শেখ সামসুদ্দীন

সময়: শনিবার, অক্টোবর ১০, ২০২০ ৫:৪১:২২ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দীন আহমেদ বলেন, আমরা প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটালাইজড পুঁজিবাজার করতে পারি, সেটা অবশ্যই সবাই গ্রহণ করবে। এর মাধ্যমে বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে। এছাড়া ব্যয় কমে আসবে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারকে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বের বুকে ছড়িয়ে দিতে চাই। একই সাথে দেশের গ্রামগঞ্জে আমাদের পুঁজিবাজার নিয়ে যাবো।

আজ শনিবার (১০ অক্টোবর) ‘টেকনলোজি টু প্রটেক্ট অ্যান্ড অ্যাসিস্ট ইনভেন্টর ইন দ্য ক্যাপিটাল মার্কেট’ শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, বিদেশিরা আমাদের দেশের ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগে গভীরভাবে আগ্রহী। কারণ তারা তাদের দেশে ১ শতাংশও রিটার্ন পায় না। তাদের সুযোগ করে দিতে পারলে বিনিয়োগ আসবে। এ নিয়ে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করেছি।

বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ভার্চুয়াল এই সভার আয়োজন করে।

বিএমবিএ প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)- এর প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন আকন্দ ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)-এর প্রেসিডেন্ট শরীফ আনোয়ার হোসেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএমবিএ’র সাধারণ সম্পাদক মো. রিয়াদ মতিন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমবিএ’র সদস্য মীর মাহফুজ-উর-রহমান।

অনুষ্ঠানে শেখ সামসুদ্দিন বলেন, পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়াতে সবপক্ষ থেকেই কাজ করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে এই মার্কেটটা অত্যন্ত বেগবান এবং গভীর হবে। যাতে করে দেশের কল্যাণ হবে।

প্রযুক্তির উন্নতির কারণে পুঁজিবাজারে ৫০ লাখ টাকার লেনদেন থেকে হাজার কোটিতে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

তবে কিছু বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএসইসির এ কমিশনার বলেন, লিস্টেড ১৫ শতাংশ কোম্পানির ওয়েবসাইট নেই বা কাজ করে না। এছাড়া ওয়েবসাইট থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৭ শতাংশের সর্বশেষ আর্থিক হিসাব নেই। অথচ এগুলো থাকা বাধ্যতামূলক। কারণ একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগের জন্য ওই কোম্পানির ওয়েবসাইটসহ অন্যান্য তথ্য থাকা উচিত।

তিনি বলেন, ৩২টি কোম্পানির ৬২ জন পরিচালক মারা গেছেন। কিন্তু ওই কোম্পানিগুলোর ওয়েবসাইটে তার আপডেট নেই। এসব কারণে বিনিয়োগকারীরাও সঠিক তথ্য পাচ্ছে না।

মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আইপিও আসে উল্লেখ করে বিএসইসির কমিশনার বলেন, বিনিয়োগকারীরা তাদের উপর আস্থা রেখে বিনিয়োগ করে থাকে। সেক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানের বিডিং প্রাইস যদি ১২ টাকা থেকে ৭৬৫ টাকা পর্যন্ত হয়, তাহলে এসব বিষয়গুলো বিএমবিএ’র দৃষ্টিগোচর হওয়া উচিত।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে আসা বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি যেন কম হয়, সেজন্য আমাদেরকে কাজ করতে হবে বলে জানান শেখ সামসুদ্দিন। তিনি বলেন, তারা যদি ঝুঁকি নিতে না চায়, তাহলে বাজারে বিনিয়োগ আসবে না। অবশ্যই এই বাজারে ঝুঁকি আছে। এই ঝুঁকি নিয়েই আমাদের এগোতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর পোর্টফোলিওতে যে তথ্য উপাত্ত আছে, তা সঠিক বলে মনে হয় না। একটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পুঁজিবাজারের বাইরে অন্যত্র বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু সেই অন্যত্র বিনিয়োগের ক্ষেত্রটি কোথায় বা কি, তা বিনিয়োগকারীর জানার প্রয়োজন আছে। সেটা জানতে পারলে হয়তো ওই মিউচ্যুয়াল ফান্ড অপছন্দ করতে পারে। যাতে করে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করতে পারবে।

বিএসইসির এই কমিশনার বলেন, আমরা তথ্য বিতরণটা সঠিকভাবে করছি না। এতে করে বিনিয়োগে ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে যৌক্তিকভাবে বিনিয়োগ করতে পারলে ঝুঁকি কমে যায়।

বিএসইসি স্টক ব্রোকার এবং ডিজিটাল বুথের জন্য নীতিমালা তৈরি করছে বলে জানান শেখ সামসুদ্দিন। এর মাধ্যমে একজন বিনিয়োগকারী যেকোন জায়গা থেকে ঝুঁকি নিরসনের জন্য তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারবে বলে জানান তিনি।

বিএসইসির এই কমিশনার বলেন, করোনা হওয়ার পরে বিএসইসি প্রযুক্তিনির্ভর অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। যেগুলো প্রমাণ করে ডিজিটালাইজড স্টক এক্সচেঞ্জ খুব উপকারী। যেমন বিভিন্ন রিপোর্টস অনলাইনে জমা করার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া এজিএম, ইজিএম অনলাইনে করার অনুমতি দিয়েছি। এতে করে ব্যয় ও সময় লাঘব হবে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৬৭ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged