সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক পরিচালকদের বিরুদ্ধে বর্তমান চেয়ারম্যানের মামলা

সময়: বৃহস্পতিবার, মে ১৯, ২০২২ ১২:১০:৩৪ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তপ্রকৌশলখাতের কোম্পানি সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সাবেক পরিচালক জাহিদুল হকের বিরুদ্ধে ১৯ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বর্তমান চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সাবেক পরিচালক জাহিদুল হক(৬০) পিতাঃ মৃত মাজহারুল ইসলাম, মোঃ আনিছ আহমেদ(৫৪) পিতাঃ মৃত আব্দুল করিম এবং সাইয়েদা সাইমা আকতার(৫২) স্বামী-মোঃ আনিছ আহমেদ-এর বিরুদ্ধে কোম্পানীর আইপিও এবং ব্যাংক ঋণের প্রায় ১৯ (উনিশ) কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১০ মে, ২০২২ইং তারিখে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকায় মামলা দায়ের করেছেন কোম্পানিটির বর্তমান চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান।

সি.আর মামলা নং ১২৮২/২২ ধারাঃ ৪২০/৪০৬/১০৯ পেনাল কোড। আদালত সূত্রে এর সংবাদ নিশ্চিত করা হয়েছে। আদালত মামলাটি তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন ২০ জুন, ২০২২ তারিখে আদালতে দাখিল করার জন্য ডি,আই,জি (পিবিআই)-কে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১২/০৪/২০১০ইং তারিখে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রাইভেট) লিমিটেড কোম্পানীটি নাম পরিবর্তন করে রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ এন্ড ফার্মস থেকে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীতে রুপান্তরিত হয় এবং গত ২১/০৪/২০১৪ইং তারিখে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমশন থেকে আইপিও এর অনুমোদন লাভ করে এবং শেয়ার বাজার থেকে টাকা ১৪,০০,০০,০০০/-(চৌদ্দ কোটি) আইপিও- এর মাধ্যমে এবং আইপিও ফান্ডের ব্যাংক সুদ হিসেবে টাকা ৩,৫৬,৫৭,০২৬/- (টাকা তিন কোটি ছাপ্পান্ন লক্ষ সাতান্ন হাজার ছাব্বিশ হাজার) মাত্র প্রাপ্ত হয়।

গত ০৮/০৯/২০১৪ইং তারিখে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে অন্তর্ভুক্ত হলে প্রায় ৪৫০০ জন শেয়ারহোল্ডার এই কোম্পানীটির শেয়ার ক্রয় করে মালিকানা অর্জন করে মালিক হয়। গত ১৮/০৬/২০১৫ইং তারিখে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানীটি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ থেকে সদস্যপদ গ্রহন করে।

গত ২৪/১২/২০১১ ইং হইতে ৩০/০৭/২০১৭ ইং পর্যন্ত আসামী জাহিদুল হক, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর, আসামী মোঃ আনিছ আহমেদ, চেয়ারম্যান এবং আসামী সাইয়েদা সাইমা আকতার, ডাইরেক্টর হিসাবে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদ বোর্ডে দায়িত্বরত ছিলেন এবং তাদের যৌথ স্বাক্ষরে কোম্পানীর সকল ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হইত। দায়িত্ব পালনকালে কোম্পানীর ২০১৬-২০১৭ইং সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখিত ৩০ জুন, ২০১৭ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালােচনায় পাবলিক অর্থ ১৪,১৪,১৩,৬০৩/- (চৌদ্দ কোটি চৌদ্দ লক্ষ তের হাজার ছয়শত তিন)টাকা এর মিথ্যা একাউন্টিং হেড (সাসপেন্স একাউন্ট এবং ক্যাপিটাল ওয়ার্কিং প্রগ্রেস) তৈরি করেছে অর্থাৎ উক্ত অর্থ কোম্পানীতে বিনিয়োগ হয় নাই, যা কোম্পানী থেকে আসামী জাহিদুল হক, আসামী মোঃ আনিছ আহমেদ, এবং আসামী সাইয়েদা সাইমা আকতার উক্ত টাকা আত্মসাত করেছেন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড বরাবর কোম্পানীর সাবেক ম্যানিজিং ডাইরেক্টর আসামী জাহিদুল হক, আসামী মোঃ আনিছ আহমেদ এবং আসামী সাইয়েদা সাইমা আকতার এর যোগসাজসে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমতি ছাড়া বন্ধকী ঋন আবেদন করিলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান এনআরবি ব্যাংক গত ১২/০৭/২০১৫ইং তারিখে কোম্পানীর মালিকানাধীন ৩৩ শতাংশ জমি, নির্মিত বিল্ডিং ও সকল মেশিনারীজ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী হিসাবে মূল্যায়ন করিয়া গত ১৫/১১/২০১৫ইং তারিখে ১২ কোটি টাকার ঋন মঞ্জুরীপত্র প্রদান করেন।

আসামী জাহিদুল হক, আসামী মোঃ আনিছ আহমেদ এবং আসামী সাইয়েদা সাইমা আকতার কোম্পানীর মালিকাধীন ৩৩ শতাংশ সম্পত্তির দলিল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীর নাম পরিবর্তন বা সংশোধন না করিয়া এজিএম/ইজিএম এর মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমতি না নিয়া পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীর সম্পত্তি জানা সত্ত্বেও অবৈধভাবে গত ২৮/১২/২০১৫ইং তারিখে সাব রেজিস্ট্রার ২য় যুগ্ম গাজীপুর জেলায় মর্টগেজ দলিল নং-১০১৯০ তারিখ ২৮/১২/২০১৫ইং রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদন করেন। বন্ধকী দলিল রেজিষ্ট্রি হওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড হইতে প্রায় ৯ কোটি টাকা উত্তোলন করিয়া আসামী জাহিদুল হক, আসামী মোঃ আনিছ আহমেদ এবং আসামী সাইয়েদা সাইমা আকতার পরস্পর যোগসাজসে উক্ত টাকা আত্মসাত করেছেন। উক্ত আসামীগন পরস্পর যোগসাজসে এবং সহযোগীতায় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীর সম্পত্তি আত্মসাত করার সহযোগীতা এবং সম্পত্তি বন্ধকী ঋন ও আইপিও করার পাবলিক অর্থ টাকা ১৯ কোটি প্রায় আত্মসাত করেছেন।

 

Share
নিউজটি ২১১ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged