মার্জিন ঋণের সুদহার নির্ধারণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেল বিএসইসি

সময়: রবিবার, জানুয়ারি ৯, ২০২২ ১:০৭:৪৮ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে মার্জিন ঋণের সুদ হারের সীমা ১২ শতাংশ কার্যকর করার এক বছর আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আগামীতে মার্জিন ঋণের সুদ হার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোই ঠিক করবে কোন গ্রাহককে কত শতাংশ হারে ঋণ দিবে। ২০২১ সালে ১২ জানুয়ারী বিএসইসি স্টক ব্রোকার এবং মার্চেন্ট ব্যাঙ্কারদের প্রদত্ত বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণের সুদের হারের ঊর্ধ্ব সীমা নির্ধারণ করেছিল ১২ শতাংশ। যার চার্জ হবে তহবিলের খরচের উপর সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ। এতে বলা হয়েছে যে স্টক ব্রোকার এবং মার্চেন্ট ব্যাংকাররা ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে মার্জিন লোন অফারের বিপরীতে ফান্ডের খরচ সহ অতিরিক্ত ৩ শতাংশ স্প্রেড সংগ্রহ করতে পারে। তবে মার্জিন লোন অফারের বিপরীতে সুদের হারের মোট চার্জ কোনভাবেই ১২ শতাংশ অতিক্রম করবে না।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো: আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়, মার্চেন্ট ব্যাংক (পোর্টফোলিও ম্যানেজার) কর্তৃক প্রদত্ত মার্জিন ঋণের উপর গ্রাহকের নিটক হতে সুদ বা মুনাফা আদায়ের ক্ষেত্রে কস্ট অব ফান্ডের সাথে যে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ স্প্রেড আদায় করতে পারবে তা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা বলবৎ থাকবে। এই নির্দেশনা থেকে সরে আসছে বিএসইসি।

এই বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, মার্জিন ঋনের সুদহার বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নির্ধারণ হোক। আমরা এই বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দিতে চাই না।

মার্জিন অ্যাকাউন্ট: মার্জিন অ্যাকাউন্ট হচ্ছে একটি ব্রোকারেজ অ্যাকাউন্ট যা কাস্টমারকে সিকিউরিটি ক্রয়ের জন্য লিভারেজ ব্যবহারের সুযোগ প্রদান করে থাকে। এরমানে হচ্ছে যে অ্যাকাউন্ট হোল্ডার বিনিয়োগ করার জন্য ব্রোকারের কাছ থেকে ঋণ নিতে পারবে। মার্জিনের নিয়ম সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রিত, কিন্তু ব্রোকার এবং ডিলারের মধ্যে আবশ্যক মার্জিন এবং ইন্টারেস্টে পার্থক্য হতে পারে।

বেশিরভাগ ব্রোকার মার্জিন অ্যাকাউন্ট সেটআপ করার সুযোগ প্রদান করে থাকে এবং আপনাকে অনেক ক্রয়ক্ষমতা প্রদান করতে পারে যার মাধ্যমে ট্রেডারের পক্ষ হতে খুব বেশি অর্থ বিনিয়োগের আবশ্যকতা থাকে না।

বিষয়টি এমন যে একজন বিনিয়োগকারী ৫০ ইউএস ডলার (ইউএসডি) দিয়ে স্টকের শেয়ার ক্রয় করলেন, যারফলে স্টকের মার্কেট প্রাইস ৭৫ ইউএসডিতে গেল। এরজন্য তিনি যদি নগদ অর্থ প্রদান করে থাকেন, তাহলে তার বিনিয়োগের রিটার্ন হচ্ছে ৫০ শতাংশ, যা ভালো পরিমানের লাভ। কিন্তু, তিনি যদি ২৫ ইউএসডি নগদ অর্থ প্রদান করে থাকেন এবং ২৫ ইউএসডি অর্থ মার্জিন হিসেবে ধার নিয়ে থাকেন, তাহলে তার রিটার্ন হচ্ছে ১০০ শতাংশ। তাকে এখনো ধার করা অর্থ ফেরত দিতে হবে, কিন্তু কয়েকটি ক্রয়ের মাধ্যমে ধারকৃত মার্জিনকে ছড়িয়ে, তিনি তার লাভ বাড়াবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত স্টকের প্রাইস উপরে যেতে থাকবে।

মার্জিন অ্যাকাউন্টের সুবিধা ও অসুবিধা: মার্জিন অ্যাকাউন্ট ব্রোকার কতৃক অফার করা হয় যার মাধ্যমে বিনিয়োগকারী সিকিউরিটি ক্রয়ের জন্য ঋণ নিতে পারেন। একজন বিনিয়োগকারী হয়তো ক্রয় মূল্যের ৫০ শতাংশ ব্যবহার করতে পারেন এবং বাকিটা ব্রোকারের কাছ থেকে ধার নিতে পারেন। ঋণের অধিকারের জন্য ব্রোকার বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে ইন্টেরেস্ট ধার্য করতে পারে এবং সিকিউরিটিকে জামানত হিসেবে রাখতে পারে। কিন্তু, ভোলাটাইল মার্কেটে ব্রোকার আবার অ্যাকাউন্টের ভ্যালু ক্লোজের সময় গণনা করতে পারে এবং তারপর পরবর্তী দিনগুলোতে রিয়েল-টাইমের ভিত্তিতে কল গণনা করতে পারে। সঠিক পরিস্থিতিতে মার্জিন ঋণ অনেক বড় মূল্যবান ট্যুল হতে পারে, কিন্তু সতর্ক থাকবেন যে এটা আপনার লাভ ও ক্ষতি দুটোই বাড়িয়ে দিতে পারে।

যখন আপনার অ্যাকাউন্টের ইক্যুইটি কমে যাবে এবং ব্রোকার নির্ধারিত রক্ষণাবেক্ষণ মার্জিন সীমার নিচে চলে যাবে, তাদের ‘মার্জিন কল’ জারি করার অধিকার থাকে। মার্জিন কল বলে যে আপনার ব্রোকার হয় আপনার পজিশন আপনার সম্মতি ছাড়াই সেল করে দিতে পারে যাতে তারা তাদের বিনিয়োগের ঝুঁকি ফেরত পেতে পারে। অথবা তারা আপনাকে আপনার অ্যাকাউন্টে আরও মূলধন বিনিয়োগ করতে বলতে পারে যাতে আপনি আপনার রক্ষণাবেক্ষণ মার্জিনের সীমার ওপর ফেরত আসতে পারেন।

মার্জিনে বাই করাটা সাধারণত শর্ট-টার্মে বিনিয়োগের জন্য ব্যবহার করা হয় ইন্টারেস্ট চার্জের কারণে। মার্জিন ভালোভাবে কাজ করে যখন বিনিয়োগের মূল্য বাড়তে থাকে, কিন্তু যখন মূল্য কমতে থাকে তখন অসমর্থ হতে পারে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ২৮৭ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged