editorial

বাজারের স্থিতিশীলতায় দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মতবিরোধের অবসান হওয়া উচিত

সময়: বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ৯, ২০২১ ১১:০৩:২৮ পূর্বাহ্ণ


শেয়ারবাজার ইস্যুতে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মতবিরোধের কারণে শেয়ারবাজার আবারও অস্থিতিশীল হয়ে ওঠতে পারে। এমনিতেই বেশ কিছুদিন ধরেই ধারাবাহিক দরপতনের কারণে শেয়ারবাজারে অস্থিরতার বিরাজ করছে। সূচক একদিন বাড়ে তো দুইদিন কমে যায়। এতে বিনিয়োগকারীরা দোটানায় রয়েছে শেয়ার লেনদেন নিয়ে। সম্প্রতি কোম্পানিগুলোর ডিভিডেন্ড মৌসুম শেষ হয়েছে। চলতি মাসেই ব্যাংক, আর্থিক ও বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর আর্থিক বছর শেষ হবে। আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকেই এই তিন খাতের কোম্পানিগুলো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে। কিন্ত বর্তমানে বাজারের যে বেহাল দশা তাতে বাজার তার স্বাভাবিক গতিতে ফিরবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্ধেহ রয়েছে। কারণ শেয়ারবাজার সম্পর্কিত কিছু বিষয় নিয়ে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে দেখা দিয়েছে মতবিরোধ। এর ফলে বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

জানা যায়, কয়েক মাস ধরে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শেয়ারবাজারে। দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিরোধ প্রকাশ্য রূপ নেওয়ায় টানা আট কার্যদিবস দরপতন হয় শেয়ারবাজারে।

এ পরিস্থিতিতে ৩০ নভেম্বর বৈঠকে বসে এই দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বৈঠক শেষে বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজারের অদাবিকৃত ডিভিডেন্ড নিয়ে গঠিত স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের ব্যাপারে একমত বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বিষয়টি নিয়ে কিছু আইনগত অস্পষ্টতা রয়েছে।তিনি বলেন, স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের বিষয়ে কিছু আইনগত অস্পষ্টতা রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিএসইসি-বাংলাদেশ ব্যাংক উভয়পক্ষ এ বিষয়ে আন্তরিক। আমাদের কারও সঙ্গে কারও কোনো মতবিরোধ নেই। বিএসইসির পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য আসার পর ১ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়। ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক একদিনে বেড়ে যায় ১৪৩ পয়েন্ট। তবে সন্ধ্যার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, শেয়ারবাজারে তফসিলি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে বিএসইসির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর একেএম সাজেদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে বিএসইসির সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত এ সভা কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিএসইসির উদ্যোগে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড গঠনের ফলে তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন এবং পুঞ্জিভূত লোকসান বিদ্যমান থাকলেও সংশ্লিষ্ট বছরের মুনাফা হতে নগদ লভ্যাংশ বিতরণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
্দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার এ দ্বিমতের অবসানের জন্য গতকাল অর্থমন্ত্রনালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এবং বাজারের স্থিতিশীলাতয় বিষয়টি দ্রুত নিরসন করা উচিত।

 

Share
নিউজটি ৩৫৬ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged