নির্ধারিত সময়ে বিএসইসি’র নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ ২৪ কোম্পানি

সময়: বুধবার, জানুয়ারি ১৯, ২০২২ ১২:৩২:৫৪ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ২৪টি কোম্পানি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো- সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, রতনপুর স্টিল রি-লোরিং মিলস (আরএসআরএম), প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, ফার্মা এইডস, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলস, ডেল্টা স্পিনার্স, কাট্টালি টেক্সটাইল, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, আজিজ পাইপস, অ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স, আলহাজ্জ টেক্সটাইল মিলস, অগ্নি সিস্টেমস, অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালস, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফু-ওয়াং ফুডস, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, ফ্যামিলিটেক্স বিডি, ফাইন ফুডস, ফু-ওয়াং সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারনের জন্য ২৫টি কোম্পানিকে সময় বেঁধে দিয়েছিল বিএসইসি। কিন্তু এই বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে মাত্র একটি কোম্পানি ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে। ওষুধ ও রাসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অ্যাডভেন্ট ফার্মা। কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা পরিপালন করেছে। বাকি ২৪টি কোম্পানিই কমিশনের নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে।

বিএসইসির নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় ২৪টি কোম্পানির বিরুদ্ধে পরবর্তী করণীয় বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এই ক্ষেত্রে যেসব কোম্পানি ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য ইচ্ছুক, তাদেরকে বিএসইসি থেকে সহায়তা করা হবে। আর যারা ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারনে কোন আগ্রহই দেখায় না, তাদের বিষয়ে ভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের চিন্তাভাবনা করছে বিএসইসি।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২৪টি কোম্পানির মধ্যে ১১টি কোম্পানির এই নির্দেশনা পরিপালনে আগ্রহী বলে জানিয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো- অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালস, অগ্নি সিস্টেমস, আলহাজ্জ টেক্সটাইল মিলস, অ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স, আজিজ পাইপস, ডেল্টা স্পিনার্স, ফু-ওয়াং সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ফু-ওয়াং ফুডস, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, ফার্মা এইডস ও সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ। ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণের জন্য সময়ের চেয়ে নির্দেশনা পরিপালনের জন্য তারা বিভিন্ন মেয়াদে বিএসইসি’র কাছে সময় চেয়ে আবেদন জানিয়েছে এসব কোম্পানি।

আর ৫টি কোম্পানি নির্দেশনা পরিপালন না করার কারণ এবং তাদের পরিকল্পনার কথা বিএসইসিকে জানিয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো- ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফাইন ফুডস, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, কাট্টালি টেক্সটাইল ও সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ।

এছাড়া বাকি ৮টি কোম্পানি নির্দেশনা পরিপালন না করার কারণ বা সময় চেয়ে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) পর্যন্ত বিএসইসিতে কোনো চিঠি পাঠায়নি। কোম্পানিগুলো হলো- সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলস, ফ্যামিলিটেক্স বিডি, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স ও রতনপুর স্টিল রি-লোরিং মিলস (আরএসআরএম)।

বিএসইসি’র মতে, যেসব কোম্পানির কিছু সংখ্যক মালিক রয়েছে, তাদেরকে সহায়তা করা হবে। বিশেষ করে কোম্পানিটির অন্যান্য যেসব শেয়ারহোল্ডার রয়েছে, তাদের মধ্যে কেউ আগ্রহী হলে তাকে পরিচালনা পর্ষদে সংযুক্ত করা হবে। সেসব কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণের জন্য কোম্পানিকে বেশি দামে শেয়ার কিনতে হচ্ছে। ফলে অনেক কোম্পানির ওই দামে শেয়ার কিনতে পারছে না বলে বিএসইসিকে অবহিত করেছে। ফলে কোম্পানিগুলোর আগ্রহ বিবেচনায় তাদেরকে সহায়তা করা হবে। তবে যেসব কোম্পানি ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করার বিষয়ে চেষ্টা করছে না, তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রকৃত কারণ ছাড়া কোম্পানিগুলোর ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থতার জন্য আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে যেসব কোম্পানির সম্মিলিতভাবে শেয়ার ধারণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তাদের জন্য পুনরায় সময় বাড়ানো হবে কি-না সে বিষয়টি নিয়ে ভাবছে কমিশন।

জানা যায়, ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রত্যেক পরিচালককে ন্যূনতম ২ শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ বাধ্যতামূলক করে নির্দেশনা দেয় সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন বিএসইসি। সংস্থাটির আইনের ‘২সিসি’ ধারার ক্ষমতাবলে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের এই নির্দেশনা জারি করা হয়। তবে, শুরুতে এই নির্দেশনাটি নিয়ে কয়েকটি কোম্পানির পরিচালক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে বিএসইসির নির্দেশনার পক্ষে রায় দেন হাইকোর্ট।

এরই ধারাবাহিকতায় বিএসইসি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানিকে উদ্যোক্তা ও পরিচালক সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য নির্দেশনা দেয়। তবে, ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএসইসির বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে এই ২৫টি কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালক সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে, সার্বিক দিক বিবেচনা করে কোম্পানিগুলোকে আরও এক মাস অর্থাৎ চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছিল বিএসইসি।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

 

Share
নিউজটি ৩০৬ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged