অনুপ সর্বজ্ঞ : গত পাঁচ বছরে ৭৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছে সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এর মধ্যে ২০১৯ সালে অনুমোদিত সীমার চেয়ে ১২ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং ২০১৮ সালে ২০ কোটি ৮ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছে কোম্পানিটি। কমিশন, বেতন-ভাতা, অফিস ভাড়া ও নানাবিধ খাত দেখিয়ে এই অতিরিক্ত ব্যয় করা হয়েছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের এ টাকা গ্রাহকের। বীমা আইন অনুযায়ী, এ ধরনের অতিরিক্ত ব্যয় অবৈধ।
ইন্স্যুরেন্স ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটি’র তথ্য অনুসারে, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সানফ্লাওয়ার লাইফ সর্বমোট ৮৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করে। এ অবস্থায় ২০১৬ সালের এপ্রিলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এক চিঠিতে বীমা কোম্পনিটিকে ব্যয় কমানোর নির্দেশ দেয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওই চিঠির জবাবে সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০১৯ সালের মধ্যে ব্যবস্থাপনা ব্যয় নির্ধারিত সীমার মধ্যে নিয়ে আসার অঙ্গিকার ব্যক্ত করে।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে আবারো সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে ব্যয় কমানোর তাগিদ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। এ প্রেক্ষিতে বীমা কোম্পানিটি ২০১৫ সালের পর ৪৪২টি অফিসের মধ্যে ৬৯টি অফিস বন্ধ করে দেয়। ১০৫টি গাড়ির মধ্যে ২৩টি গাড়ি কমিয়ে ফেলে। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের ৭২৫ কর্মকর্তার মধ্যে ৪৬ কর্মকর্তা কমিয়ে ফেলে। তবে বেতন-ভাতা ও কমিশন খরচ কমায়নি কোম্পানিটি।
ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় কমাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’র বারবার তাগিদ দেয়ার পরও সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০১৫ সালে ১৯ কোটি ৬ লাখ টাকা, ২০১৬ সালে ১৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা, ২০১৭ সালে ১০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, ২০১৮ সালে ২০ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং ২০১৯ সালে ১২ কোটি ৯১ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছে।
সর্বশেষ হিসাব সমাপনী বছর ২০১৯ সালে সানফ্লাওয়ার লাইফ ১০৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করে ৫৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। তবে ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ৪০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর আগে ২০১৮ সালে কোম্পানিটি ১০৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করে ৬৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। সে বছর কোম্পানিটির ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ৪৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুল আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি ।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান